পৌষের তীব্র শীত আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারীর মানুষ। ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন ও গৃহপালিত পশুপাখি। কনকনে ঠান্ডায় শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে পড়েছে হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষজন।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস।
গত চারদিন থেকে দেখা মিলছে না সূর্যের। দিনের বেলা সূর্যের উত্তাপ না থাকায় হিমেল বাতাসে কমছে তাপমাত্রা। কুয়াশার ঘনত্ব বেশি হওয়ার যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে দিনের বেলায় যাতায়াত করছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না।
ঋতু চক্রে পৌষ ও মাঘ এই দুই মাস শীতকাল। এখন চলছে পৌষের প্রথমভাগ। শীতের তীব্রতাও বেড়ে গেছে। তার সঙ্গে বইছে উত্তরের হিমেল হাওয়া।
দিন যাচ্ছে শীতের তীব্রতা যেন বেড়েই চলছে। তার সঙ্গে কমছে তাপমাত্রাও। কনকনে ঠান্ডায় কষ্টে পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আগুনের কুণ্ডলী জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
দিনের বেলা সূর্যের উত্তাপ না থাকায় হিমেল বাতাসে কমতে থাকে তাপমাত্রার পারদ।
উপজেলার চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের মফিজ উদ্দিন (৮০) জানান, ‘কি ঠান্ডা বাহে পাতলা কাপড়োত ঠান্ডায় যাবার নাগছে না। কেমন করি বাইচমো কনতো।’
উপজেলার জয়মিনির হাট ইউনিয়নের অটোচালক রহিম জানান, অটো নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছি, কিন্তু যাত্রী পাচ্ছি না। গত দুইদিন থেকে অটো মালিকের প্রতিদিনের জমার টাকাও রোজগার করতে হিমশিম খাচ্ছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার দত্ত জানান, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ কম্বল কেনা হয়েছে, যা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও জেলা থেকে ৬০০ কম্বল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে থেকে ৫০০ কম্বল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দেওয়া হবে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ৫ দিন তাপমাত্রা আরো কিছুটা কমতে পারে এবং শীতের তীব্রতা অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
এমকে/টিএ