রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নে চাঁদাবাজির অভিযোগে গণপিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মণ্ডল ওরফে সম্রাট (৩৫) নিহতের ঘটনায় পাংশা মডেল থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের ভাই অমিয় মণ্ডল বাদী হয়ে পাংশা মডেল থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। এ ছাড়া চাঁদাবাজি ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় আরও দুটি মামলা হয়েছে।
নিহত অমৃত মণ্ডল ওরফে সম্রাট পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের হোসেনডাঙ্গা গ্রামের কামারের মোড় এলাকার মৃত অক্ষয় মণ্ডলের ছেলে। গত বুধবার রাতে সহযোগীকে নিয়ে চাঁদা আদায়ে গেলে গণপিটুনিতে তিনি নিহত হন।
পাংশা মডেল থানা সূত্র জানায়, রাতে সম্রাট সহযোগী সেলিম হোসেনকে নিয়ে চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে হোসেনডাঙ্গা গ্রামের শহীদ শেখের বাড়িতে যান। এ সময় শহীদ শেখ চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে সম্রাট ও তাঁর সহযোগীদের গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সম্রাটকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় একটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটার গান উদ্ধার করা হয়।
এদিকে সম্রাটের নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে ভারতের গণমাধ্যমে সাম্প্রদায়িক হামলার আবহ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ঘটনার পর পরই এনডিটিভি এটাকে ‘আরেক হিন্দু ব্যক্তি’কে হত্যা বলে খবর প্রকাশ করে। সামাজিক মাধ্যমেও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়।
এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্ত ও পুলিশের তথ্যমতে ঘটনাটি কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস ঘটনার ফল।
সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারান। তাঁর নামে ২০২৩ সালে দায়ের করা একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তবে ঘটনার কঠোর নিন্দা জানিয়ে সরকার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা যে কোনো ধরনের সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না।
পাংশা মডেল থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজি, অস্ত্র উদ্ধার ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছে।
এসকে/টিকে