আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় নিজের পেশা, সম্পদ ও আয়ের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
হলফনামা অনুযায়ী, তিনি একজন ব্যবসায়ী। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৮৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৪১ টাকা এবং বার্ষিক আয় ২০ লাখ ৪০ হাজার ৪৮ টাকা।
নুরুল হক নুরের নির্বাচনি হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪২৬ টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে আয় ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৬২২ টাকা। সব মিলিয়ে তার মোট বাৎসরিক আয় দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪০ হাজার ৪৮ টাকা। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন আদালতে বর্তমানে ছয়টি মামলা চলমান। এসব মামলার মধ্যে কয়েকটি তদন্তাধীন এবং কয়েকটিতে তিনি এজাহারভুক্ত ও অভিযুক্ত। আটটি মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) নুরুল হক নুরের নির্বাচনি হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
হলফনামা অনুযায়ী, নুরের নগদ অর্থ রয়েছে ২৮ লাখ ৩৮ হাজার ২১৭ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ২ লাখ ৮৯ হাজার ৩১৩ টাকা। এছাড়া কোম্পানির শেয়ারে তার বিনিয়োগ রয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অন্যান্য আমানতের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৫৫ লাখ ৮০ হাজার ৩১১ টাকা। তবে হলফনামায় তার গহনার কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
স্থাবর সম্পদের বিবরণে বলা হয়েছে, নুরুল হক নুরের নামে ৮২ ডেসিমেল কৃষিজমি রয়েছে, যার অর্জনকালীন মূল্য ৬২ হাজার টাকা। দায় সংক্রান্ত তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, তার নামে পাওনাদারের কাছে দেনা রয়েছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ১৬০ টাকা।
হলফনামায় নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে চলমান মামলার তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন আদালতে তার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এসব মামলার কয়েকটি তদন্তাধীন এবং কয়েকটিতে তিনি এজাহারভুক্ত ও অভিযুক্ত। এর আগে আটটি মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।
নুরুল হক নুরের স্ত্রী মারিয়া আক্তারের পেশা হিসেবে শিক্ষকতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮১৮ টাকা। হলফনামা অনুযায়ী, মারিয়া আক্তারের নগদ অর্থ রয়েছে ৩০ হাজার ৯৪১ টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৭ টাকা। তার নামে তিন একর কৃষিজমি রয়েছে, যার মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। স্ত্রীর বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৮৮০ টাকা।
হলফনামা অনুযায়ী, নুরুল হক নুর ও তার স্ত্রী উভয়েই নিয়মিত আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। সেখানে নুরের মোট সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৯০ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪১ টাকা এবং তার স্ত্রীর মোট সম্পদের পরিমাণ ১২ লাখ ৬৬ হাজার ৮১৮ টাকা।
পারিবারিক তথ্য হিসেবে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, নুরুল হক নুরের তিন সন্তান রয়েছে—দুই মেয়ে ও এক ছেলে। এছাড়া তার ওপর নির্ভরশীল হিসেবে বাবা, মা, ভাই ও বোনের কথাও উল্লেখ রয়েছে।
হলফনমার তথ্য অনুযায়ী বার্ষিক আয়ের দিক থেকে বড় রাজনৈতিক নেতাদের ছাড়িয়ে গেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসু সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। ব্যবসায়ী পেশার নুরের বার্ষিক আয় ২০ লাখ ৪০ হাজার ৪৮ টাকা, যা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বার্ষিক আয়ের চেয়েও বেশি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার ১৮৫ টাকা। তার বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫৩ টাকা, যার বিপরীতে তিনি ১ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকা আয়কর পরিশোধ করেছেন। ডা. শফিকুরের সম্পদের পরিমাণ এক কোটি ৪৯ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৪ টাকা। বার্ষিক আয় তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা। এছাড়া শিক্ষকতা ও পরামর্শক হিসেবে বছরে ১৬ লাখ টাকা আয় করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
ইউটি/টিএ