পলিথিন পরে সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা

মহামারী করোনাভাইরাসে যুক্তরাজ্যে প্রতিদিনই মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্ত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাজ্যের সরকার। এছাড়া দেশটির স্বাস্থ্য সেবাও ব্যাহত হচ্ছে চরমভাবে। বিশেষ করে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স, এ্যাম্বুলেন্স চালকসহ সংশ্লিষ্টরা স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সংকটে পড়েছে বলে জানা গেছে।

বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু আইসিইউ’তে কর্মরতদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারটি নিয়ে অনেক চিকিৎসক বিবিসির কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

কয়েকজন চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন, গণমাধ্যমে তাদের কথা বলার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলোতে করোনা আক্রান্ত রোগীতে ভরা। কিন্তু সে অনুযায়ী আইসিইউ নেই। আর যেসব হাসপাতালে আইসিইউ আছে, সেসব হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সুরক্ষা সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে।

চিকিৎসকরা আরও জানান, অনেক হাসপাতালে কর্মী সংকট রয়েছে। এছাড়া সাধারণ এন্টিবায়োটিক ও ভেন্টিলেটরের অভাব রয়েছে অধিকাংশ হাসপাতালে। যে কারণে যুক্তরাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাজ্যে ১৪ থেকে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে বড় ধরণের আঘাত হানবে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস। কারণ এই সময়টা যুক্তরাজ্যের জন্য পিক টাইম।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, কঠিন সময় সামনে রেখে যুক্তরাজ্যের প্রস্তুতি খুবই বাজে অবস্থায় রয়েছে। অনেক চিকিৎসক ও নার্স পলিথিন পরে কাজ করছেন। অনেকেই প্লাস্টিকের এ্যাপ্রন ও স্কিইং চশমা ব্যবহার করছেন। কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বানিয়ে নিয়েছেন, যা খুব বেশি স্বাস্থ্য সম্মত নয়। এতে চিকিৎসক ও নার্সদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যাবে।

যুক্তরাজ্য যদি তাদের হাসপাতালগুলোতে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রাধান্য না দেয়, তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা।

চিকিৎসকরা বলছেন, তাদের যেসব সুরক্ষা সরঞ্জাম দেয়া হয়েছে, তার বেশির ভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ ও অকেজো। এছাড়া অনেক সরঞ্জামের দৃশ্যমান ত্রুটি রয়েছে। এগুলো ব্যবহার করে করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দেয়া চরম ঝুঁকিপূর্ণ।

এসব ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের পাবলিক হেলথ বিভাগ বলছে, মেয়াদোত্তীর্ণ সরঞ্জাম ব্যবহারে কোনো ঝুঁকি নেই। এসব সরঞ্জাম পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই হাসপাতালগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে।

এছাড়া দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস জানিয়েছে, দেশটিতে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিতরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন কিনা তা তাদের জানা নেই।

 

টাইমস/এসএন

 

Share this news on: