করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারী রুখতে সব থেকে ভালো উপায় হলো ঘরে অবস্থান করা। গোটা পৃথিবীর মানুষ নিজ নিজ গৃহে অবস্থান করে ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া রুখতে সচেষ্ট।
তবে জীবনের নানা তাগিদে আমাদেরকে প্রায়শই ঘরের বাইরে পা রাখতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঝুঁকি বাড়ছে করোনাভাইরাসটিকে ঘরে নিয়ে আসার। যদিও বাইরে থেকে ফিরে আমরা সচেতনতার সঙ্গে সাবান বা সানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করছি। তবুও মনে ভয় থেকে যাচ্ছে, আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য জিনিসপত্র যেমন- মোবাইল ফোন, চাবি কিংবা টাকার সঙ্গে ভাইরাসটি কি আমাদের সংক্রমিত করতে পারে?
আসুন এবার জেনে নিই চাবি, মোবাইল কিংবা টাকার মাধ্যমে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হবার ঝুঁকি কতটা সে সম্পর্কে।
যদি আপনাকে বাইরে যেতে হয়, তাহলে বাড়ি ফিরে আপনার স্মার্টফোন, মানিব্যাগ, টাকা, চাবি প্রভৃতি জিনিসগুলি গরম পানি ও সাবান দিয়ে ধুয়ে নেবেন?
এ বিষয়ে গ্লোবাল সংক্রামক রোগ ও মহামারী নেটওয়ার্কের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডা. স্টিফেন বার্গার বলেন, “আমরা সবাই ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাকসহ পরজীবীর অদৃশ্য সমুদ্রে সাঁতার কাটছি। আপনার সেলুলার ফোন, হাত ঘড়ি, চশমাসহ পৃথিবীর সব কিছুর উপর অগণিত ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ঘোরাফেরা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আশার কথা হলো- এদের বেশিরভাগের কাছ থেকে আমাদের কোনো বিপদ নেই। তাছাড়া আপনার ব্যক্তিগত জগতের প্রতিটি বিষয় বাধ্যতামূলকভাবে পরিষ্কার করার কোনো দরকার নেই, শুধু আপনার নিজের হাতটি সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা জরুরি। বিশেষত যখন কোভিড-১৯ সংক্রমণের কথা আসে সেখানে প্রকৃত অপরাধী আপনার নিজের হাত।”
অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের নির্দেশিকা মতে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত ওয়াইপ বা স্প্রে ব্যবহার করে ফোন এবং ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য পরিষ্কার করলে তা জীবাণুমুক্ত হবে।
“বর্তমানের কোভিড-১৯ মহামারীটির জন্য দায়ী ভাইরাসটি আপনাকে আপনার নাক বা মুখের মাধ্যমে সংক্রামিত করবে। এর কারণ আপনি হয়তো আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন। অথবা সংক্রমিত কোনো বস্তু স্পর্শ করেছেন, তারপর হাত না ধুয়ে নাক বা মুখ স্পর্শ করেছেন,” বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এক্ষেত্রে টাকার মধ্য দিয়ে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, টাকা বিভিন্ন ধরণের মানুষের মধ্যে আদান-প্রদান হয় এবং প্রায়শই আমাদের এটি স্পর্শ করতে হয়।
বার্গার বলেন, “খুব কম লোকই বুঝতে পারে যে আমাদের মায়েরা যেমনটা বলেন, টাকা সত্যিই তেমনটা ‘নোংরা’। বেশ কয়েকজন গবেষক তাদের গবেষণায় কাগজের টাকায় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, পরজীবীসহ অন্যান্য জীবন্ত জিনিসের উপস্থিতি দেখিয়েছেন।”
তবে টাকা জীবাণুমুক্ত করা বা ব্যবহার করা বন্ধ করে দেয়া বাস্তব সম্মত নয়। তাই আমাদের উচিত হবে টাকা, মানিব্যাগ, চাবি, মোবাইল প্রভৃতি নিত্য ব্যবহার্য বস্তু যা আমরা ঘরের বাইরেও ব্যবহার করি এবং যা থেকে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে তা স্পর্শ করার পর হাত না ধুয়ে নাক ও মুখ স্পর্শ থেকে অবশ্যই বিরত থাকা। তথ্যসূত্র: ওয়েবএমডি
টাইমস/এনজে/জিএস