‘পার্থক্য আছে বলেই তো ঐক্যের আলোচনা হয়। আমরা সব কিছুতে ঐকমত্য হয়ে যাব, এটা বাস্তবসম্মত নয়। আমাদের চিন্তা করতে হবে, সর্বনিম্ন কতটুকু ঐকমত্যে আমরা আসতে পারি।’ সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শো অনুষ্ঠানে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপক প্রশ্ন করেন, তারেক রহমান একটা কথা বলেছেন যে সংস্কার বা ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েম করতে হবে। এ জন্য ঐক্যের কথা কিন্তু সবাই বলেছেন, কিন্তু ঐক্য কি একটু অনৈক্যের দিকে যাচ্ছে বলেই অনৈক্যের কথায় সবাই জোর দিচ্ছেন?
জোনায়েদ সাকি এ প্রশ্নের উত্তরে আরো বলেন, ‘আমাদের কতটুকু ঐকমত্য অপরিহার্য, তার একটা লক্ষ্য থাকে। যেমন ধরেন এই আন্দোলনে একটা লক্ষ্য তৈরি হলো যে ভোট শুধু নয়, ভোটের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। তার মানে ভোট নিশ্চিত করতে গেলে একটা ভোটে নয়, ধারাবাহিকভাবে নিশ্চিত করতে গেলে আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থাটা এমনভাবে আনতে হবে, যেখানে গণতান্ত্রিক ভারসাম্য আছে। ভারসাম্য থাকলেই জবাবদিহি থাকবে কেউ স্বৈরাচারী হতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘ভারসাম্য ও জবাবদিহি আনতে গেলে, গণতন্ত্র কায়েম করতে গেলে কতটুকু ন্যূনতম ক্ষমতার ভারসাম্য লাগবে, অপরিহার্য অংশটুকু কি আমরা কিন্তু সেইটুক জায়গায় ঐক্যের কথা বলছি এবং যে আলোচনা হচ্ছে, এইটুকুই ন্যূনতম। আমরা এখনো আশাবাদী যে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা যতটুকু এগোচ্ছি হয়তো আরো কিছুটা অর্জন আমরা করতে পারব।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সাংবিধানিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অথবা আপার হাউসে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টে মোট প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আসন প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং সংবিধান সংশোধন পাস হতে হবে এই বাধ্যবাধকতা থাকা, যদিও আমরা প্রস্তাব দিয়েছি যে উচ্চকক্ষে সিম্পল মেজরিটিতেই সেটা পাস হতে পারবে। এই জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে, এখানে কিছু মতপার্থক্য হচ্ছে।’
তিনি বলেন, সাংবিধানিক পথ বলতে পাঁচ ছয়টি বিষয়কে আমরা বুঝেছি, এর মধ্যে একটি জায়গা অন্তত নির্বাচন কমিশন। এখানে যদি আমরা ন্যূনতম নিয়োগের জায়গাটা বদল না ঘটাতে পারি, তাহলে ভবিষ্যৎ নিয়েও আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না যে আবারও একই বৃত্তে আমরা পাক খাব কি না?
তিনি আরো বলেন, ‘যে নিয়মের রাজনীতিটা চলবে এবং সেই নিয়মের মধ্যে যে ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহি না থাকলে নিয়মটাই ঠিক হয় না। এই অপরিহার্য দিকটাতে আমরা ঐক্য করার কথা বলছি, যেটা না হলে আবার আমরা যে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেতে পারলাম, এ বিষয়ের নিশ্চয়তাটা পাওয়া যাচ্ছে না।’
আরআর/টিএ