কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে সুস্থ হতে কতদিন লাগবে তা নির্ভর করবে আপনি প্রথমদিকে কতটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তার উপর। কিছু লোক দ্রুত সুস্থ হতে পারে, আবার কারও কারও ক্ষেত্রে অনেক সময় লাগতে পারে।
বয়স, লিঙ্গ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলি কোভিড-১৯ তে আক্রান্ত হলে আরও গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা শক্তিশালী তার উপরেও আপনার সেরে ওঠার সময় নির্ভর করবে। এছাড়াও আপনি কতটা কার্যকর চিকিৎসা গ্রহণ করছেন সেটিও আপনার সেরে ওঠা নিয়ন্ত্রণ করবে।
আপনার যদি হালকা উপসর্গ থাকে তাহলে সেরে উঠতে কতদিন লাগবে?
কোভিড-১৯ আক্রান্ত বেশিরভাগ লোকই কেবল হালকা উপসর্গ উপলব্ধি করেন, যেমন- কাশি বা জ্বর। তবে তারা শরীরের ব্যথা, ক্লান্তি, গলা ও মাথা ব্যথা অনুভব করতে পারেন। সাধারণত শুকনো কাশি হয়, তবে কারও কারও কফ হতে পারে।
এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন, প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার পান করুন এবং ব্যথানাশক যেমন প্যারাসিটামল গ্রহণ করতে পারেন।
জ্বর এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে সেরে যাবে, তবে কাশি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডাব্লুএইচও) মতে, কোভিড-১৯ সারতে গড়ে দুই সপ্তাহ সময় নেয়।
যদি আপনার আরও গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে কতদিন লাগবে?
এই রোগটি কারও কারও ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এটি সংক্রমণের প্রায় সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে ঘটে থাকে। হঠাৎ করে রোগটি চরম আকার ধারণ করতে পারে। এই পর্যায়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং ফুসফুস ফুলে যায়। এর কারণ, শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা রোগটির বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই করার চেষ্টা করছে, এটি ভাইরাসটি দমনের জন্য মাত্রাতিরিক্ত চেষ্টা করেছে এবং একই সঙ্গে শরীরের ক্ষতি হচ্ছে।
এই অবস্থায় কিছু লোককে কৃত্রিম অক্সিজেন সরবরাহের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। এই ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার হতে দুই থেকে আট সপ্তাহ সময় নিতে পারে।
কখন নিবিড় পরিচর্যা বা আইসিইউতে যাবার প্রয়োজন হয়?
ডাব্লুএইচও’র মতে প্রায় প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজন ব্যক্তির নিবিড় চিকিৎসার প্রয়োজন হবে, যার মধ্যে ভেন্টিলেটর লাগানো অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। নিবিড় বা ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) যেকোনো পর্যায় থেকে সেরে উঠতে সময় লাগবে, অসুস্থতা যাই হোক না কেন। রোগীদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়ার আগে আইসিইউ থেকে সাধারণ ওয়ার্ডে সরানো হয়।
ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন অনুষদের ডিন ডা. অ্যালিসন পিটার্ড এবিষয়ে বলেন, নিবিড় পরিচর্যার ক্ষেত্রে কোন স্পেলের পরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগতে পারে।
এছাড়া হাসপাতালের বিছানায় দীর্ঘ সময় ব্যয় করার ফলে পেশীর ব্যাপক ক্ষতি হয়। রোগীরা দুর্বল হয়ে পড়েন এবং পেশী পুনরুদ্ধার হতে সময় লাগে। কিছু লোকের আবারও স্বাভাবিক হাঁটাচলা করার জন্য ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন হবে।
তবে, এটি নিশ্চিত করে বলা শক্ত। কারণ কিছু লোক আইসিইউ ইউনিট থেকে দ্রুত ফিরে আসেন, আবার কেউ কেউ কয়েক সপ্তাহ ধরে কৃত্রিম অক্সিজেন সাপোর্টে থাকেন। তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ
টাইমস/এনজে/জিএস