নতুন গবেষণায় জানা গেছে, স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হ্রাস পাওয়া বা একেবারে নষ্ট হয়ে যাওয়া হতে পারে কোভিড-১৯ রোগটির মৃদু উপসর্গ। ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর অ্যালার্জি অ্যান্ড রাইনোলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় এমনটি জানানো হয়েছে।
ইউসি সান ডিয়োগো হেলথের গবেষকরা প্রথমবারের মতো স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হারানোর সঙ্গে কোভিড-১৯ রোগটির সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে এর ফলে, কোভিড-১৯ সংক্রমিত কাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা জরুরি আর কারা ঘরে থেকেই চিকিৎসা নিতে পারবেন তা নির্ধারণ করা আরও সহজ হবে।
এ বিষয়ে ইউসি সান ডিয়োগো হেলথের হেড এবং নেক সার্জন ক্যারোল ইয়েন বলেন, “আমাদের গবেষণা বলছে, যদি আপনার স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হ্রাস পায় তবে আপনার কোভিড-১৯ সংক্রমণের সম্ভাবনা সাধারণের তুলনায় ১০ গুণ বেশি । গন্ধ ও স্বাদ অনুভবের ক্ষমতা হ্রাস অন্যান্য প্রাথমিক লক্ষণগুলিকে অনুসরণ করে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা জানি কোভিড-১৯ একটি অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাস। এই গবেষণাটি কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে গন্ধ ও স্বাদ হ্রাস সম্পর্কে সচেতন হওয়ার প্রয়োজনকে সমর্থন করে।”
অন্যদিকে, ইউনাইটেড স্ট্যাট এয়ার ফোর্স মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পসে কর্মরত ডা. মিশাইল জাইদাকিস এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “ঘ্রাণশক্তি হারোনার মানে কোভিড-১৯ রোগটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বা এটি একটি মৃদু উপসর্গ।” তবে কোভিড-১৯ রোগটির ফলে ঘ্রাণশক্তি এভাবে কেন নষ্ট হয় সে সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
গবেষণা বলছে, রোগটি থেকে সুস্থ হতে যতটা সময় লাগে, স্বাদ ও গন্ধ অনুভবের ক্ষমতা আবারও ফিরে পেতেও প্রায় অনুরূপ সময় লাগে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যেসব ব্যক্তি ক্রমাগত গলা ব্যথা অনুভব করেছেন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে।
ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ইউসি সান ডিয়োগো হেলথ এখন থেকে তাদের স্টাফ ও ভিজিটরদের স্ক্রিনিংয়ের তালিকায় ‘স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হ্রাস’ যুক্ত করেছে। এছাড়াও সম্ভাব্য কোভিড-১৯ সংক্রমিতদের তালিকায় স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হ্রাস পাওয়া রোগীদের অন্তর্ভুক্ত করেছে।
গবেষকরা ধারণা করছেন কোভিড-১৯ রোগটির ফলে যারা স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হারাচ্ছেন খুব সম্ভবত তাদের হাসপাতালে ভর্তি হবার প্রয়োজন নেই, তারা ঘরে থেকেই চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। তবে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে এখনও আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন গবেষকরা। তথ্যসূত্র: সাইন্স ডেইলি ও মেডিক্যাল নিউজ টুডে
টাইমস/এনজে/জিএস