চলতি জুন থেকেই শুরু শ্রমিক ছাঁটাই: রুবানা হক

‘চলতি জুন থেকে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হবে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত বাস্তবতা। কিন্তু করার কিছু নেই। কারণ শতকরা ৫৫ শতাংশ ক্যাপাসিটিতে ফ্যাক্টরি চলছে। আমাদের ছাঁটাই ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। তবে এ ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদের জন্য কী করা হবে; এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলছি, কীভাবে এ সংকট মোকাবিলা করা যায়। তবে এ অবস্থা হঠাৎ করে বদলেও যেতে পারে। তখন ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরাই কাজে যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।’

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক এসব কথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য দেশের প্রথম ‘স্টেট অব দ্য আর্ট কোভিড-১৯ ল্যাব’ উদ্বোধন উপলক্ষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।

রুবানা হক বলেন, কারখানাগুলোতে অর্ডার কমেছে অর্ধেক। বর্তমানে দুই হাজার ২৭৪টি কারখানার মধ্যে এক হাজার ৯২৬টি উৎপাদনে রয়েছে। বাকিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৪৬টি কারখানার প্রায় ১৮ হাজার শ্রমিকের কয়েক মাসের বেতন বাকি রয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু কারখানা ঈদের আগে তাদের বোনাস দিতে পারেনি। তবে এসব কারখানা আগামী ৬ মাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বোনাস-বকেয়া দিয়ে দেবে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের সময়ে প্রায় ৩ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ শতাংশ ফেরত আসছে। তবে যারা ফেরত এসেছে তারা আবার বিভিন্ন শর্ত দিচ্ছে।

তিনি আরও জানান, বিশ্বে ভোক্তার চাহিদা কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থা বলছে, আগামীতে ৬৫ শতাংশ চাহিদা কমে যাবে। তাই পোশাকের চাহিদা বাড়ার তেমন সম্ভাবনা কম। দেশের পোশাক কারখানায়ও ৫৫ শতাংশ কমে যাবে। ৪২ হাজার কোটি টাকা মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ক্ষতি হবে। করোনায় দেশের ৯৯ শতাংশ পোশাক কারখানার ৫৫ শতাংশ ক্যাপাসিটি দিয়ে চালাতে হবে। জুনে কারখানাগুলোতে ৩০ শতাংশ কাজ হবে। জুলাইতে কী হবে বলা যাচ্ছে না। আমাদের বড় ধাক্কা খেতে হবে। এটি অপ্রত্যাশিত কিছু নয়।

তবে করোনা বিস্তারের সময়ে চলতি অর্থবছর পোশাকখাতে রপ্তানি আয় কমলেও সেটা ২৩ বিলিয়ন হবে বলে প্রত্যাশা করেন পোশাক কারখানা মালিকদের এ নেতা।

তিনি বলেন, বুধবার (৩ জুন) রাত পর্যন্ত ২৬৪ জন শ্রমিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সবাই চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন, চিকিৎসার সব ব্যয় বহন করছে কারখানা মালিক।

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, এফবিসিসিআই ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন (এমপি), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)-এর সাবেক সভাপতি মতিন চৌধুরী, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী (এমপি), ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বাডাস)-এর সভাপতি প্রফেসর ডাক্তার এ কে আজাদ খান প্রমুখ।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দুই দিনেই ঝড় তুলল অজয়-রাকুল এর জুটি Nov 17, 2025
img
নিরাপত্তা শঙ্কায় নতুন পদক্ষেপ নিলেন দিশা পাটানির বাবা Nov 17, 2025
img
বিচার স্বচ্ছ হয়েছে, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: মিয়া গোলাম পরওয়ার Nov 17, 2025
img
নির্বাচনের আগেই হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসি দিতে হবে : সারজিস Nov 17, 2025
img
পৃথিবীর যেকোনো আদালতে শেখ হাসিনার একই সাজা হবে: চিফ প্রসিকিউটর Nov 17, 2025
img
যেদিন গ্রেপ্তার, সেদিন থেকে সাজা কার্যকর: অ্যাটর্নি জেনারেল Nov 17, 2025
img
হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে ভারতকে ফের চিঠি দেবে সরকার : আইন উপদেষ্টা Nov 17, 2025
img
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডে খেলাফত মজলিস আমিরের প্রতিক্রিয়া Nov 17, 2025
img
রায়কে ঘিরে আতঙ্ক দেখতে পাচ্ছি না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনার রায়ের দিনে ঝলক দেখাল পুঁজিবাজার Nov 17, 2025
img
সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত, ভারতীয় সেনাপ্রধানের কড়া হুঁশিয়ারি Nov 17, 2025
img
পার্শ্ববর্তী দেশ অশান্তির উসকানি দিচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Nov 17, 2025
img
আসামিদের ফাঁসির রায়ে আমি কষ্ট পেয়েছি : হাসিনার আইনজীবী Nov 17, 2025
img
রাতে বৈঠকের ডাক দিল বিএনপির স্থায়ী কমিটি Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে : আসিফ নজরুল Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডকে ন্যায়বিচার বললেন সোহেল তাজ Nov 17, 2025
img
'রুনাকে দাও, বিনিময়ে ফারাক্কার সব পানি নিয়ে যাও' Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ Nov 17, 2025
img
নিহত ভারতীয় ওমরাহযাত্রীদের নিয়ে মোদির ফেসবুকে স্ট্যাটাস Nov 17, 2025