কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে দেখা দিতে পারে ক্রাইসিস ফেটিগ

২০২০ সাল সবার জন্যই একটি সংকটময় সময়। চলমান কোভিড-১৯ মহামারী, এর ফলে উদ্ভূত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা প্রভৃতি কারণে বিশ্বজুড়ে অগণিত মানুষ আতঙ্ক-উত্তেজনাসহ নানা ধরনের মানুষিক চাপের মধ্যে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা এই চাপের ফলে নানারকম মানসিক ও শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তার একটি হলো- ক্রাইসিস ফেটিগ বা সঙ্কট কালীন ক্লান্তি।

কোভিড-১৯ এর ফলে আমরা কমবেশি সবাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছি, এই রোগটির ফলে আমাদের স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এইসব কারণে প্রতিদিন আমাদের উপর যে ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে তা থেকে অনেকেই দুঃখ, উদ্বেগ, ক্রোধ এবং ভয়ের মতো বিভিন্ন নেতিবাচক আবেগ অনুভব করছেন। আবার অনেকে শুধু অসাড় বা ক্লান্তি বোধ করতে শুরু করেছেন। এই সংবেদনশীল মানসিক পরিস্থিতিকে “সঙ্কটের অবসন্নতা বা সঙ্কট কালীন ক্লান্তি” হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

ক্রাইসিস ফেটিগ বা সঙ্কট কালীন ক্লান্তি কি?
মনরোগ ও আচরণ বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক ফিরদৌস এস ধাবার (পিএইচডি) এ বিষয়ে বলেন, “ফ্লাইট-ওর-ফাইট প্রতিক্রিয়া বা স্বল্পমেয়াদী স্ট্রেস (চাপ) আমাদের জন্য ইতিবাচক। চাপের জৈবিক প্রতিক্রিয়া আমাদেরকে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি বা সংকটের সময়ে রক্ষা পেতে সহায়তা করে। তবে, এই চাপ যখন দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায় এবং সপ্তাহ, মাস বা বছর ধরে চলতে থাকে, যখন এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকে এবং অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে তখন এটি আমাদের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে শুরু করে।”

লোকেরা সঙ্কটের প্রাথমিক পর্যায়ে তা প্রতিরোধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রচুর পরিমাণে শক্তি বিনিয়োগ করে ফেলে, এই সময় দেহে প্রচুর অ্যাড্রেনালিন নিঃসরণ হয়। তবে মানবদেহ দীর্ঘ সময়ের জন্য উচ্চমাত্রায় অ্যাড্রেনালিন নিঃসরণ ঘটাতে পারে না, এর ফলে হাঠাৎ অ্যাড্রেনালিন চুত্যি বা ক্রাশ অনিবার্য হয়ে ওঠে। এর ফলে দেখা দেয় দীর্ঘস্থায়ী অবসন্নতা, হতাশা ও ক্লান্তি। এই পর্যায়টি ‘ক্রাইসিস ফেটিগ বা সঙ্কট কালীন’ ক্লান্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়।

ফিরদৌসের মতে সব সময় এই সঙ্কট কালীন ক্লান্তি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না, তবে এটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা যেতে পারে। এ বিষয়ে তার পরামর্শগুলি হলো-

  • শারীরিক সুস্থতার চারটি স্তম্ভের যত্ন নিন। এগুলি হলো- পুষ্টি, ঘুম, যৌন সম্পর্ক ও ব্যায়াম।
  • বন্ধু, পরিবার ও সমাজের সাথে বৃহত্তর অর্থে সংযুক্ত থাকুন। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির সহায়তা নিতে পারেন।
  • রুটিন মাফিক চলার চেষ্টা করুন। এটি আপনাকে আপনার জীবনের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
  • নিয়মিত মেডিটেশন বা মাইন্ডফুলনেশ চর্চার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

তবে নিজে থেকে এই অবস্থা কাটিয়ে না উঠতে পারলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তারের সহায়তা নিতে হবে বলে মনে করেন ফিরদৌস। তথ্যসূত্র: হেলথলাইন

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
তানজিদের অভিষেক ফিফটিতে টাইগারদের বড় জয় May 03, 2024
img
শনিবার থেকে ট্রেনে বাড়তি ভাড়া, কোন রুটে কত May 03, 2024
img
আরআরআর'র সভাপতি আনোয়ার হোসেন সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম May 03, 2024
img
মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক হলো আসিফের May 03, 2024
img
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা : জয়দেবপুর স্টেশন মাস্টারসহ তিনজন সাময়িক বরখাস্ত May 03, 2024
img
নির্বাচনী আচরণবিধি না মানলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না: ইসি রাশেদা May 03, 2024
img
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, তানজিদের অভিষেক May 03, 2024
img
অতি গরমের প্রভাব বাজারে, বেড়েছে মুরগি-সবজির দাম May 03, 2024
img
সরকারকে যারা চাপে রাখতে চেয়েছিল তারা নিজেরাই চাপে আছে: ওবায়দুল কাদের May 03, 2024
img
শনিবার বন্ধ থাকবে ২৫ জেলার স্কুল-মাদরাসা May 03, 2024