আমাদের দেহ ঘড়ির (সার্কিয়ান রিদম) নিয়ম অনুযায়ী দিনের আলো নিভে গেলে শরীরের খাদ্য প্রয়োজন হয় না। তাই দিনের আলো কমে যাওয়ার সাথে সাথে দেহের বিপাক প্রক্রিয়াটি ধীর হয়ে যায় এবং শক্তির স্তর কমতে থাকে।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী ওজন হ্রাস করতে চাইলে দিনের শুরুতে (নাস্তায়) এবং শেষে (রাতের খাবারে) হালকা কিছু খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে ওজন হ্রাস করা ছাড়াও রাতে হালকা খাবার গ্রহণের আরো অনেক সুবিধা রয়েছে।
এটি হজম ও বিপাকের পক্ষে ইতিবাচক এবং ওজন হ্রাস করতেও সহায়তা করে। অন্যদিকে রাতে দেরী করে ভারী ও অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে আমাদের দেহ অধিকতর সতর্ক অবস্থায় থাকে এবং দেহ ঘড়ি বা সার্কিয়ান রিদমের সাথে বৈপরীত্য সৃষ্টি হতে পারে।
ভারী খাবার হজম করার জন্য আমাদের শরীরকে তুলনামূলকভাবে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। তাই ওজন হ্রাস করতে এবং হজম ও ঘুম উন্নত করতে চাইলে রাতে কি খাচ্ছেন কখন খাচ্ছেন তা গুরুত্বপূর্ণ।
ওজন হ্রাস এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর ফলাফলের জন্য রাতের অভ্যাসে যেসব পরিবর্তন আনতে হবে
অল্প করে খাওয়ার অভ্যাস করুন
যেহেতু এই সময়ে আমাদের হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায় এবং আপনি আপনার ওজন কমাতে চাইছেন। তাই অল্প করে হালকা খাবার গ্রহণ করা উচিত। এর জন্যে আপনি ছোট প্লেট ব্যবহার করতে পারেন।
ওজন কমাতে চাইলে সব সময় খাবারের সময় ছোট প্লেট ব্যবহার করতে হবে। কারণ ছোট প্লেট মনস্তাত্ত্বিক ভাবে আমাদের কম খাবার গ্রহণে সহায়তা করে। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করুন। কিন্তু সেটা যেন পরিমিত পরিমাণে হয় এবং নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে।
সম্পূর্ণ পেট ভরে খাবেন না
ওজন কমাতে চাইলে কখনোই পেট ভরে খাওয়া চলবে না। বিশেষ করে রাতের বেলা এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আপনার চাহিদার ৮০ শতাংশ খাওয়ার আগেই উঠে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
রাতে খুব বেশি খেলে হজমে সমস্যা ও ঘুমে ব্যাঘাত দেখা দিতে পারে এবং ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
রাতে বিছানায় যাওয়ার কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে খাবার গ্রহণ করুন
রাতের খাবার খাওয়ার সাথে সাথে বিছানায় যাবেন না বা শুয়ে পড়বেন না। আপনার রাতের খাবার এবং ঘুমাতে যাওয়ার সময়ের মধ্যে কমপক্ষে দুই ঘণ্টার ব্যবধান থাকা উচিত।
এর ফলে শরীর খাবার হজম করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পায় এবং ঘুম ভাল হয়। এটি আপনার দেহের ওজন হ্রাস প্রক্রিয়াত্বরান্বিত করবে।
মধ্যরাতে খিদে পেলে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন
প্রথমদিকে রাতে হালকা নৈশভোজ গ্রহণের অনুশীলন শুরু করলে মধ্যরাতে খিদে পেতে পারে এবং প্রথম কয়েক সপ্তাহ এটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে মধ্যরাতে ভাজা-পোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার বা ভারী খাবার খাবেন না।
বিকল্প হিসেবে স্বাস্থ্যকর কোনো খাবার গ্রহণ করতে পারেন, যেমন- এক কাপ গরম দুধ, কয়েকটি বাদাম, কলা প্রভৃতি।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।
টাইমস/এনজে