গর্ভধারণে হৃদরোগের ঝুঁকি

হৃদরোগের ঝুঁকির ক্ষেত্রে গর্ভধারণের প্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। তবে চীনা গবেষকদের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিঃসন্তান নারীদের তুলনায় যারা গর্ভধারণ করেছেন তাদের হৃদরোগ ও স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা বেশি।

সম্প্রতি ‘ইউরোপিয়ান সোসাইটি অফ কার্ডিওলোজি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এ তথ্য ওঠে এসেছে।

এর আগে বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভধারণের কারণে রক্তনালীর বৈশিষ্ট্য, রক্তের আয়তন ও হৃদকম্পনের মাত্রায় পরিবর্তন ঘটে। তবে হৃদরোগের ঝুঁকির ক্ষেত্রে গর্ভধারণের প্রভাব নিয়ে বরাবরই বিতর্ক থেকে গেছে।

গর্ভধারণের সঙ্গে কার্ডিওভাসকুলার ডিসিস বা হৃদরোগের সম্পর্ক রয়েছে কি না তা জানতে চীনের হুবেই প্রদেশ ভিত্তিক হোয়াঝং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দশটি গবেষণার ফলাফল পর্যালোচনা করেছেন।

বিশ্বব্যাপী তিন মিলিয়ন নারীকে এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে দেড় লাখেরও বেশি নারী ৬ থেকে ৫২ বছরের মধ্যে হৃদরোগ ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

গবেষকরা দেখেছেন যে, একবার সন্তান জন্মদানের কারণে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। একইসঙ্গে গর্ভধারণের সংখ্যার সঙ্গে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক রয়েছে বলেও এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, ওজন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান ইত্যাদি উপাদান ছাড়াও কেবল প্রতিবার সন্তান জন্মদানের কারণেই নারীদের কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হবার ঘটনা চার শতাংশ বেশি ছিল।

সেইসঙ্গে প্রতিবারে সন্তান জন্মদানের ফলে নারীদের করোনারি হার্ট ডিসিস ৫ শতাংশ ও স্ট্রোক তিন শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

গবেষণাদলের প্রধান ওয়াং ডংমিং বলেন, গর্ভধারণের কারণে দেহে প্রদাহ ঘটে এবং তলপেটের চারপাশে ফ্যাট টিস্যুর জমাট বৃদ্ধি পায়। এই পরিবর্তনগুলোই মূলত দেহের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে স্থায়ীভাবে প্রভাবিত করে যা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।

তবে এক্ষেত্রে নারীদের অনেক কিছু করার আছে বলে গবেষকরা মনে করেন।

এজন্য ভবিষ্যৎ সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ধূমপান ছেড়ে দেয়া, অধিকহারে নিয়মিত ব্যায়াম করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on: