ভাঙা ঘরে স্বপ্নজয়ের গল্প, অভাবী সেই ছেলেটি এখন ডাক্তার

এই ঘরে পড়াশোনা করেই আজ তিনি ডাক্তার হয়েছেন। বিসিএস ক্যাডারও হয়েছেন। চলুন তার মুখ থেকেই জেনে নেই জীবনের গল্পটা,

এটা আমার পড়ার ঘর (২০০২-২০০৭)। কালের বিবর্তনে আজ সে গোয়াল ঘরে পরিণত হয়েছে। এই ঘরে বসেই আমার লেখাপড়ার বেসিক তৈরি হয়েছিল। আজও মনে পড়ে সেই Tense, narration, voice, transformation of sentence, কারক, সমাসসহ পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, অংকের সীমাহীন পড়াশোনার কথা। অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য হতে পারে কিন্তু এটা সত্য যে এই সময় টাতে আমি দিনে কখনও সাড়ে চার ঘন্টার বেশি ঘুমায় নি। আল্লাহর রহমতে সোনাবাড়িয়া হাই স্কুল থেকে আমি প্রথম এবং আমার ব্যাচে একা GPA 5 পেয়েছিলাম সম্ভবত ২০০৭ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়া থেকে আমি একাই মেডিকেলে চান্স পেয়েছিলাম।

আমার জানা নেই আর কেউ ছিল কিনা কারণ তখন আর কারো কথা শুনিনি। কেউ থাকলে ভাল। ২০১৩ সালে MBBS পাশ করেছি। ২০১৫ সালের Residency Course এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে Colorectal surgery তে পড়ার সুযোগ পাই যা বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র ডিপার্টমেন্ট এবং আমি একমাত্র সিটে চান্স পাই। পরবর্তীতে MS Phase A পাশ করে phase B এক বছর শেষ করে ৩৭তম বিসিএসে যোগদান করে বর্তমানে নাটোরে কর্মরত আছি।

আল্লাহ চাইলে আগামী এপ্রিলে আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসব। এই সময়টা (২০০২-২০০৭) আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় যা এই ঘরে পড়াশোনার মাধ্যমে অতিবাহিত হয়েছে। এটা আমার নানীর বাড়ি। আজ নানী নেই। ঘরটা আছে। তবে অন্যকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আমি অনেক দরিদ্র ঘরের সন্তান। ওই সময়টা আমি এক খাতায় চারবার লিখতাম। একবার পেন্সিল দিয়ে, একবার লাল কালি দিয়ে, একবার সবুজ কালি দিয়ে এবং শেষে কালো কালি দিয়ে। আমি বাগআচড়া কলেজ থেকে intermediate পাশ করি। সোনাবাড়িয়া থেকে বাগআচড়া প্রায় ৯ কিলোমিটার। আমি বাসা থেকে সাইকেলে যাওয়া আসা করতাম।কোন দিন এক টাকার নাস্তা ভাগ্যে জুটেনি। তবে যে পরিমাণ লেখাপড়া করেছিলাম, আজও আমার চোখের সামনে আমার বইগুলো ভাসে। আজ সেই অভাব নেই। কিন্তু সেই পরিবেশকে খুব মিস করি। তখন পরিবেশ অনেক ভালো ছিল। আজ সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো।

লেখক : ডা. আসাদুজ্জামান

টাইমস/জেকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ জারির মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানকে পাকাপোক্ত করতে হবে’ Sep 18, 2025
img
পাইক্রফটকে ‘ভারতের প্রিয় ম্যাচ রেফারি’ বললেন রমিজ রাজা Sep 18, 2025
img
পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি Sep 18, 2025
img
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো নিষিদ্ধ হয়ে যাক : ঐশী Sep 18, 2025
img
প্রতিটি ভোটারের আস্থা নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম দায়িত্ব : তারেক রহমান Sep 18, 2025
img
দ্বিতীয় দিনের মতো ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন নাহিদ Sep 18, 2025
img
বাংলাদেশে সবচাইতে আগে জরুরি জাতীয় নির্বাচন : জিল্লুর রহমান Sep 18, 2025
img
মেটা উন্মুক্ত করলো নতুন ডিসপ্লে স্মার্ট গ্লাস Sep 18, 2025
img
গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল: বার্নি স্যান্ডার্স Sep 18, 2025
img
ঢাকায় আজ বিক্ষোভ করবে জামায়াতসহ ৭ দল Sep 18, 2025
img
জয়পুরহাটে ছাত্রদলের সম্মেলন ব্যর্থ, ৭ নেতাকে বহিষ্কার Sep 18, 2025
img
তোমার অভাব প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব করি: অপু বিশ্বাস Sep 18, 2025
img
আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড Sep 18, 2025
img
সমুদ্রে পাওয়া গেল ৮ ধরনের ভারী খনিজ Sep 18, 2025
img
‘ডাইরেক্ট থ্রোতে’ মাথায় বল লেগে মাঠের বাইরে আম্পায়ার Sep 18, 2025
img

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে আলোচনা সভা

‘বাংলাদেশের এখনকার পরিস্থিতি আমাদের মানতে হবে, বুঝতে হবে’ Sep 18, 2025
img
ঢাবির পরিবহনে ডিজিটাল রূপান্তর, চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং অ্যাপ Sep 18, 2025
img
অস্কারের সমালোচনায় এমি পোলার Sep 18, 2025
img
আলভারেজ বিতর্কের পর ফুটবলে পেনাল্টির নিয়মে বড় পরিবর্তন Sep 18, 2025
img
৩ বছর পরে হাবিবের জন্য নতুন গান লিখলেন অলিক Sep 18, 2025