চার বছরেও রুম্পার চেহারা দেখেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা!

পাবনার ঈশ্বরদীতে ফারিহা তাবাসসুম রুম্পার বাড়ি। পড়াশোনা করতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে জোর করে বিয়ে দেয়া হচ্ছিল। তবে তার সঙ্গে একটি ছেলের সম্পর্ক থাকায় তিনি বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না। পরিবারের চাপে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

সোমবার (২৬ অক্টোবর) উপজেলার বাবুলচরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অথচ এই মেয়েটি অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন। বোরখা পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাফেরা করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা চার বছরেও তার চেহারা দেখতে পারেননি।

জানা গেছে, রুম্পা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলে। পাবনার ঈশ্বরদীর বাবুলচরা গ্রামের ফরিদ উদ্দিন মণ্ডলের মেয়ে তিনি। চার বছর ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করলেও তার চেহারা কেউ দেখননি বলে সহপাঠীরা জানিয়েছেন।

তার সহপাঠী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা চার বছর ধরে রুম্পার সাথে ক্লাস করেছি, কিন্তু কোনদিন তার চেহারা দেখিনি। সে ভদ্র এবং অত্যন্ত ধার্মিক ছিলো। তার আত্মহত্যার বিষয়টি যখন ছবি দিয়ে আমাদের গ্রুপে শেয়ার করা হয়, তখন আমরা কনফিউজড ছিলাম এটি রুম্পা কিনা। কারণ, আমরা কখনো তাকে দেখিনি।

সহপাঠীরা বলেন, ক্লাস সেভেন থেকে একটি ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল রুম্পার। তবে ছেলেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হওয়ায় রুম্পার পরিবার তাদের এ সম্পর্ক মেনে নেয়নি। বিষয়টি নিয়েই পরিবারে দ্বন্দ্ব ছিল। হয়তো জোর করেই তাকে অন্যত্র বিয়ে দিতে চেয়েছিল। রুম্পা সে জন্য আত্মহত্যা করতে পারে।

রুম্পার পারিবারের সদস্যরা জানায়, ঢাকার একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ডিপ্লোমা শেষবর্ষের ছাত্র রাজু ইসলামের সঙ্গে রুম্পার প্রেমের সম্পর্ক বহুদিনের। রাজুর বাড়ি রুম্পার গ্রামেই।

সম্প্রতি অন্য জায়গায় রুম্পার বিয়ের কথাবার্তা শুরু হলে রাজুকে ছাড়া সে অন্য কাউকে বিয়ে করবে না বলে পরিবারকে জানায়। কিন্তু রাজুর বাবা হাফিজুলের সঙ্গে রুম্পার পরিবারের বিরোধ ছিল। যে কারণে রুম্পার বাবা ফরিদ মন্ডল রাজু ও রুম্পার বিয়ে বা সম্পর্কের ব্যাপারে রাজি ছিলেন না। এসব নিয়ে পারিবারিক কলহের এক পর্যায়ে রুম্পা কয়েকদিন আগে রাগ করে তার ভাই সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তা রিপন মন্ডলের বাসায় গিয়ে ওঠেন। সোমবার সেখানেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন রুম্পা।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, এটি একটি হৃদয় ঘঠিত ব্যাপার বলে জানতে পেরেছি, যা তার পরিবার মনে নেয়নি। জোর করে অন্য জায়গায় ব্যবস্থা করেছিলো বলে বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে বলা হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছে।

ঈশ্বরদী থানার ওসি শেখ নাসির উদ্দীন রুম্পার আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে আপত্তি না থাকায় লাশের ময়নাতদন্ত ছাড়াই রুম্পার দাফন হয়েছে।

 

টাইমস/জেকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আল্লাহর অপার করুণা আমরা আ. লীগ থেকে দুজনই বহিষ্কার হয়েছি : লতিফ সিদ্দিকী Nov 15, 2025
আলাস্কা সামিটেও শান্তির আলো দেখা যাচ্ছে না Nov 15, 2025
গাজায় বাহিনী গঠনের মার্কিন প্রস্তাবে আপত্তি চীন-রাশিয়াসহ একাধিক আরব দেশও Nov 15, 2025
"জুলাই আন্দোলনকে অন্য খাতে নিতে বিএনপির চেষ্টা" Nov 15, 2025
ঢাকা ও আশপাশের জেলায় ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন Nov 15, 2025
একের পর এক টার্মিনাল হস্তান্তর, চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি অপারেটরদের দখল Nov 15, 2025
জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল উদ্ধার নিয়ে যা জানালো পুলিশ Nov 15, 2025
'অন্যদের কেনা যায়, কমিউনিস্ট পার্টিকে কেনা যায় না' Nov 15, 2025
যে স্পোর্টসে আমরা ভালো করছি, সেগুলোতে আরও ফোকাস করব : ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ Nov 15, 2025
বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত ফ্রান্সের Nov 15, 2025
অমিতাভ রেজার তৃতীয় বিয়ে, পরিচয় পেলেন নতুন জীবনসঙ্গী Nov 15, 2025
রাহুল কুমার বিয়ে করলেন তুর্কি কেজিবানের সঙ্গে Nov 15, 2025
শাহরুখের নতুন রূপে মুম্বাইয়ে বিলাসবহুল আয়োজন Nov 15, 2025
মিস ইউনিভার্সে বাংলাদেশের মিথিলার জোড়ালো লিড Nov 15, 2025
img
ভোলার গ্যাস ভোলাতেই ব্যবহার করব: জ্বালানি উপদেষ্টা Nov 15, 2025
শারজাহতে প্রথম মঞ্চে ‘রুহ-ই-নুর’ Nov 15, 2025
সুস্থ হয়ে ফান-কমেডিতে ফিরলেন অর্চিতা স্পর্শিয়া Nov 15, 2025
শাকিব–হানিয়া জুটি কি আসছে বড় পর্দায়? Nov 15, 2025
img
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের নৈশভোজে বিএনপি মহাসচিব Nov 15, 2025
img
ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে : সাকি Nov 15, 2025