জর্জ ওয়াশিংটন: সর্বক্ষেত্রে যিনি প্রথম

জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২-১৭৯৯) যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট এবং মার্কিন জাতির পিতা। তার নেতৃত্বেই আমেরিকান বিপ্লব সংগঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র বৃটিশ শাসন থেকে স্বাধীন হয়।

ওয়াশিংটনের পৃর্বপুরুষেরা ছিলেন বৃটিশ। তার দাদা জন ওয়াশিংটন ১৬৫৬ সালে ইংল্যান্ড থেকে আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় পাড়ি জমান। ১৭৩২ সালের ২২ফেব্রুয়ারি ব্য়াররি ভার্জিনিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন জর্জ ওয়াশিংটন। লেখাপড়া করেন নিজ গৃহে এবং চার্চে। ১৬ বছর বয়সে সর্ভেয়ার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৭৫০ সালে মেজর পদে ভার্জিনিয়া মিলিটারিতে যোগ দেন। তিনি ১৭৫৮ সালে বৃটিশ রেজিমেন্ট থেকে অবসর নেন এবং তার কমিশন পদত্যাগ করেন।

অবসর গ্রহণের এক মাসের মধ্যেই তিনি মার্থা ওয়াশিংটনকে বিয়ে করেন। তার গৃহে শতাধিক ক্রীতদাস থাকলেও তিনি দাসপ্রথার সমর্থক ছিলেন না। ১৭৫৮ সালে তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং ভার্জিনিয়ার হাউস অব বুর্গেসের সদস্য নির্বচিত হন। এসময় তিনি বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেন এবং বৃটিশ পণ্য বর্জনের আহবান জানান। ১৭৭৫ সালে তিনি প্রথম মহাদেশীয় কংগ্রেসের সদস্য নির্বাচিত হন এবং ব্রিটিশ বিরোধী যুদ্ধে কমান্ডার-ইন-চীফ নিযুক্ত হন। ১৭৮৩ সালে তিনি আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ১৭৮৯ সালে তিনি আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। আমেরিকার ইতিহসে তিনিই একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি প্রত্যেক ইলেক্টরের ভোটে নির্বাচিত হন।

তিনি অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার পরিবর্তে বহির্বিশ্বের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর জোর দেন। ১৭৯৭ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন। অবশেষে ১৭৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। তার মৃত্যুতে খোদ বৃটিশ বাহিনী তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এমন কি নেপোলিয়ান দশ দিনের শোক ঘোষণা করেন।

ওয়াশিংটন আমেরিকানদের কাছে এতই জনপ্রিয় ছিলেন যে, তিনি চাইলে আমেরিকার রাজা হয়ে থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি কেবল একজন মার্কিন নাগরিকই হতে স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন। তিনি কেবল একজন সৈনিক এবং বিপ্লবীই ছিলেন না, ছিলেন একজন মহান ব্যাক্তিত্বের অধিকারী, দায়িত্ববান, সম্মানিত এবং দেশপ্রেমিক। যুদ্ধে, শান্তিতে এবং নেতৃত্বে সকল ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন প্রথম।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভোট বর্জন করেও জাকসুর ভিপি-জিএস পদে কত ভোট পেল ছাত্রদল? Sep 14, 2025
img
সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে সংস্কৃতি উপদেষ্টার শোক Sep 14, 2025
img
২৫ বছরের জন্য বাফুফেকে ৮ জেলা স্টেডিয়াম বরাদ্দ Sep 14, 2025
img
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারে সুপার ফোর স্বপ্নে বড় ধাক্কা টাইগারদের Sep 14, 2025
img
জাকসুর ভিপি জিতুর ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগের কারণ কী? Sep 14, 2025
img
সেই ফাইয়াজের ভাই এবার জাকসুর জিএস Sep 13, 2025
img
ফজলুর রহমানকে গালি দিয়ে স্লোগান দেওয়া ফারজানা চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার Sep 13, 2025
img
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই Sep 13, 2025
হাইকমিশনের খালি গাড়িতে ডিম নিক্ষেপ, নিরাপদেই ছিলেন মাহফুজ আলম Sep 13, 2025
‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে’ Sep 13, 2025
img
লিটমাস টেস্টের ফল কী বার্তা দিচ্ছে? Sep 13, 2025
img
চীনা বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিল বাংলাদেশি প্রতিনিধি দল Sep 13, 2025
img
পিআর পদ্ধতি সাধারণ মানুষ বোঝে না: মাহমুদুর রহমান মান্না Sep 13, 2025
img
পাকিস্তানে সংঘর্ষে প্রাণ গেল অন্তত ১৯ সৈন্যের Sep 13, 2025
img
দেড় কোটি টাকা কানাডায় মেয়ের কাছে পাচার, অভিযোগে ও আলোচনায় সাবেক প্রধান শাহীনুল Sep 13, 2025
img
ফের শক্তিশালী বৃষ্টিবলয়ে প্রবেশ করছে দেশ Sep 13, 2025
img
জাকসুর ফলাফল ঘোষণায় এত সময় লাগার কারণ Sep 13, 2025
img
জাকের ও শামিমের ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি পেল বাংলাদেশ Sep 13, 2025
‘আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে আমরা জানি, গোপালগঞ্জে দেখে এসেছি’ Sep 13, 2025
img
ছেলে ভিপি নির্বাচিত হওয়ায় গর্বিত সাদিক কায়েমের বাবা Sep 13, 2025