জাপানে এক মাসে ২১৫৩ জনের আত্মহত্যা: বাড়ছে প্রবণতা

কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন জাপানে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। শুধু গত মাসেই জাপানে এত মানুষ আত্মহত্যা করেছেন, যা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েও সবমিলিয়ে মারা যায়নি।

জাপান সরকারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবরে আত্মহত্যা করেছেন ২,১৫৩ জন জাপানী। অন্যদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের দেয়া তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে গত শুক্রবার পর্যন্ত দেশটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ২,০৮৭ জন। খুব কম দেশই জাপানের মতো আত্মহত্যা সম্পর্কিত তথ্য এত দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকাশ করে।

গবেষকরা বলছেন, জাপানের এই পরিস্থিতি থেকে অন্য দেশগুলোতেও কোভিড-১৯ মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কতটা আঘাত হেনেছে তা ধারণা করা যেতে পারে।

টকিও’র ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মিচিকো উয়েদা এ সম্পর্কে বলেন, ‘এমনকি আমরা কোনও লকডাউন দিইনি, অন্য দেশের সাথে তুলনা করলে আমাদের দেশে কোভিড এর প্রভাবও খুব সীমিত। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি আত্মহত্যার হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর থেকে ধারণা করা যায় ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলোতেও একই রকম কিংবা আরও ব্যাপক হারে আত্মহত্যার ঘটনা বেড়ে যেতে পারে।’

দেশটিতে আত্মহত্যার গড় হার প্রতি ১ লাখে ১৮.৫ জন। যা বিশ্বের গড় হারের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি। আত্মহত্যার কারণও বেশ জটিল। সাধারণত কাজের চাপ, স্কুলের চাপ, বিচ্ছিন্ন ও নানা মানসিক জটিলতা দেশটির আত্মহত্যার প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত।

কিন্তু গত দশ বছর ধরে দেশটিতে আত্মহত্যার ঘটনা ক্রমেই কমে আসছিল। ২০১৯ সালে দেশটি প্রায় ২০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেন। যা ১৯৭৮ সালের পর সর্বনিম্ন। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির শুরু হওয়ার পর থেকে আবারও তা বাড়তে শুরু করেছে।

গবেষকদের হিসাব মতে, নারীরা বর্তমানে কোভিড-১৯ মহারির ফলে সব থেকে বেশি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন। গত অক্টোবরে জাপানে নারীদের আত্মহত্যার হার বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ।

১০ হাজার ব্যক্তির ওপর অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কেয়ার কর্তৃক পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে এ সময়ের মধ্যে নারীদের মানসিক চ্যালেঞ্চ প্রায় ২৭% বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে পুরুষের ক্ষেত্রে তা বৃদ্ধি পেয়েছে ১০%।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নারায়ণগঞ্জে আ. লীগ নেতা ডালিম গ্রেপ্তার Sep 17, 2025
img
চাকসু নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাফি Sep 17, 2025
img
আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি সরকার গঠন করবে : দুদু Sep 17, 2025
img
সেনাপ্রধানের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ Sep 17, 2025
img
মনোনয়নপত্র নিলেন সাদিক কায়েমের ছোট ভাই Sep 17, 2025
img
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এগিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ: মার্কিন দূতাবাস Sep 17, 2025
img
পিআর নিয়ে আলোচনার টেবিলে আসুন: সালাহউদ্দিন আহমদ Sep 17, 2025
img
‘জানেই না তাদের ভেতরটা কত কুৎসিত’ কাদের বিষয়ে বললেন প্রভা? Sep 17, 2025
img
জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা Sep 17, 2025
img
ডাকসুতে শিবিরের জয় জামায়াতের জাতীয় পর্যায়ের চ্যালেঞ্জ : তাসনুভা জাবিন Sep 17, 2025
img
আগামীর রাজনীতি হবে মেধানির্ভর : পুতুল Sep 17, 2025
img

জবানবন্দিতে নাহিদ ইসলাম

রাজাকারের নাতিপুতি ট্যাগ দেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল অমর্যাদাকর জবানবন্দিতে নাহিদ Sep 17, 2025
img
অ্যাডিশনাল ডিআইজি জালাল উদ্দিন চৌধুরী আর নেই Sep 17, 2025
img
দুর্গাপূজাকে ঘিরে যেকোনো হীন উদ্দেশ্য ব্যর্থ করে দিতে হবে : মির্জা ফখরুল Sep 17, 2025
img
আমি মুখ খুললে চাহালই বিপদে পড়বে : ধনশ্রী Sep 17, 2025
img
আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে কোন দলকে সমর্থন করবেন নাসুম Sep 17, 2025
img
অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা, সফরসঙ্গী হচ্ছেন ৪ রাজনীতিবিদ Sep 17, 2025
img
দুর্গাপূজায় ১৫ বছর অনুদান ছিল দুই কোটি টাকা, এবার পাঁচ কোটি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Sep 17, 2025
img
আদর্শ মানুষ গড়তে নৈতিক শিক্ষার বিকল্প নেই : মেয়র শাহাদাত Sep 17, 2025
img
তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ হলেন নেদারল্যান্ডসের ফাস্ট বোলার Sep 17, 2025