বিকালের ঘুম মানেই তা ক্ষতিকর, প্রচলিত ধারণা এমনই। বলা হয়ে থাকে বিকালের ঘুম আমাদের অলস করে দেয়, ফলে কর্ম দক্ষতাও কমে যায়। এমনি অনেকে বলে থাকেন এর ফলে দেহে বাসা বাঁধতে পারে নানা অসুখ বিসুখ। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় পাওয়া গেছে ভিন্ন তথ্য।
জেনারেল সাইকিয়াট্রি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার ফলে জানা যাচ্ছে, বিকালের ঘুম ষাটোর্ধ ব্যক্তিদের মস্তিষ্ক কর্মক্ষম রাখতে সহায়ক। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দেখা গেছে, যে সকল ষাটোর্ধ ব্যক্তি বিকালে ঘুমান অন্যদের তুলনায় জ্ঞানীয় দক্ষতার পরীক্ষায় তারা ভাল ফল করেছেন।
চীনের বৃহৎ নগরী সমূহে পরিচালিত এই জরিপে মোট ২,২১৪ জন অংশগ্রহণ করেছেন। যাদের মধ্যে ১৫৩৪ জনের বিকেলে ঘুমানোর অভ্যাস আছে এবং বাকী ৬৮০ জনের তা নেই।
জ্ঞানীয় দক্ষতা বিশ্লেষণের জন্য গবেষকরা ‘মিনি মেন্টাল স্টেট এক্সাম’ পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। এই পদ্ধতিতে দৃষ্টিগত বিশ্লেষণধর্মী দক্ষতা, মনোযোগের সময়কাল, সমস্যা-সমাধান, কার্যকরী স্মৃতি শক্তি, স্থানীয় সচেতনতা এবং মৌখিক সাবলীলতা প্রভৃতি বিচার করা হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে জেভো ডাভিনা রামকিসসুন বলেন, “ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত চাপ ও পরিশ্রম কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে। এছাড়াও ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক সাময়িক স্মৃতিতে সংরক্ষিত অপ্রয়োজনীয় তথ্য মুছে ফেলে, যা মস্তিষ্ককে নতুন তথ্য গ্রহণে আরো বেশি কার্যকর করে তোলে।”
কতক্ষণ ঘুমালে তা স্বাস্থ্যকর?
গবেষকদের মতে, আদর্শ ন্যাপ বা স্বল্প ঘুমের মাত্রা হবে ১০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে এবং দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যেই ঘুমানো উত্তম। তবে ৬০ মিনিট ঘুমাতে পারলে তা স্মৃতি শক্তিকে বেশি কার্যকর করে তুলবে।
তবে সব ঘুম কিন্তু স্বাস্থ্যকর নয়, এক ঘণ্টার অধিক বিকেলের ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এ বিষয়ে স্লিপ ফাউন্ডেশনের মেডিকেল রিভিউ প্যানেলে সদস্য এবং স্লিপ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ড. অভিনব সিং সহমত প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, যেকোন ব্যক্তিই বিকেলের স্বল্প ঘুমের উপকারিতা পেতে পারেন। তবে আপনি যদি প্রায়শই ১ ঘণ্টার থেকেও বেশি সময় ধরে ঘুমান তবে বুঝতে হবে আপনার রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে, যা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার উৎস হতে পারে। তথ্যসূত্র: হেলথলাইন.কম
টাইমস/এনজে/এসএন