ত্বকের ক্যান্সারে ধূমপানের প্রভাব

আমরা সবাই জানি ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু অনেকের ধারণা ধূমপানে কেবল ফুসফুসের ক্যান্সার হয়ে থাকে। অথচ নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ত্বকের ক্যান্সারের উপরও ধূমপানের প্রভাব রয়েছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ধূমপান সরাসরি ম্যালানোমা ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষের সঙ্গে ধূমপায়ীদের দেহের আচরণকে প্রভাবিত করে।

মারাত্মক এক প্রকার ত্বকের ক্যান্সার ম্যালানোমায় আক্রান্ত প্রায় ৭০০ জনেরও বেশি রোগীর উপর এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।

গবেষণায় দেখা যায়, ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের যারা কখনোই ধূমপান করেনি, তাদের থেকে যারা নিয়মিত ধূমপান করেছে তাদের ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ কম।

এছাড়া রোগপ্রতিরোধী কোষের জন্য সর্বাধিক জেনেটিক ইন্ডিকেটরস রয়েছে, এমন ১৫৬ জন রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন যে, যারা কখনো ধূমপান করেনি, তাদের থেকে যারা নিয়মিত ধূমপান করে তাদের ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠার সম্ভাবনা সাড়ে চারগুণ কম।

লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ডারমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণাদলের প্রধান ড. জুলিয়া নিউটন-বিশপ বলেন, মানব দেহের ইমিউনি সিস্টেম অনেকটা বিভিন্ন অংশ নিয়ে গঠিত বাদক দলের মত। গান চলাকালে ধূমপান করলে শিল্পীরা হয়তো গান চালিয়ে যেতে পারবে, কিন্তু এটা ছন্দময় ও সুসংগঠিত হবে না। একইভাবে ধূমপান মানব দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে বাঁধাগ্রস্ত করলে এটা সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।

এর ফলে ধূমপায়ীদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা ম্যালানোমায় ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষকে ধ্বংস করতে ও সারিয়ে তুলতে চেষ্টা করে। কিন্তু যারা ধূমপান করে না, তাদের তুলনায় ধূমপায়ীদের এই প্রতিরোধ চেষ্টা খুব একটা কার্যকর হয় না। এজন্য যারা ধূমপান করে তাদের ক্যন্সার থেকে সেরে ওঠার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন গবেষক নিউটন-বিশপ।

গবেষকদের দাবি, ধূমপান সরাসরি ব্যক্তির ইমিউনি সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটা তাদের ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধী সামর্থ্যকে পরিবর্তন করে ফেলে এবং ধূমপানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

তাই গবেষকরা ম্যালানোমা ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের পুরোপুরি ধূমপান ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on: