জীবন বাঁচাবে আড়াই মিনিটের সেপসিস টেস্ট

যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক এমন একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন, যা খুব দ্রুত মানব দেহে সেপসিস (পচন) নির্ণয় করতে পারবে। সেপসিস হচ্ছে মানব দেহের এমন একটি জটিল অবস্থা, যা থেকে সংক্রামক রোগ হয়ে থাকে।

যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষণাদল পরীক্ষামূলকভাবে একটি মাইক্রো-ইলেকট্রোড ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন, যা মানুষের রক্ত বিশ্লেষণ করে এবং মাত্র আড়াই মিনিটের মধ্যেই খুব দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করে।

অথচ সেপসিস রোগ নির্ণয়ের জন্য বর্তমানে প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। অর্থাৎ এই সময়ের ভিতরে প্রতিনিয়ত রোগটির বিস্তার ঘটতে থাকে, যা রোগ চিহ্নিত হবার পূর্বেই মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।

সম্প্রতি ‘বায়োসেন্সরস অ্যান্ড বায়ো-ইলেক্ট্রনিক্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেহের কোথাও আঘাত পেলে বা ইনফেকশন দেখা দিলে মানব দেহের ইমিউনি সিস্টেমের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়ার কারণে ওই স্থানে সেপসিস (পচন) দেখা দেয়। এই অবস্থা দেহের অঙ্গ ও কলাকেও আক্রমণ করে।

আক্রান্ত হবার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত এই সমস্যা নির্ণয় করা গেলে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের মাধ্যমে এর চিকিৎসা সম্ভব হতে পারে। যদি নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে সেপসিস নির্ণয় করা না যায়, তবে সংশ্লিষ্ট অঙ্গ অকার্যকর হয়ে যেতে পারে এবং চিকিৎসা করা না গেলে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ছয় মিলিয়নেরও বেশি মানুষ সেপসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়, যেখানে কেবল ইংল্যান্ডেই মারা যায় প্রায় বায়ান্ন হাজারেরও বেশি।

গবেষকদের মতে, সেপসিস রোগের উপসর্গগুলো অনেকটা গ্যাস্ট্রিক, ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা বুকের সংক্রমণ রোগের উপসর্গের সঙ্গে সদৃশ হয়। তাই এই রোগ নির্ণয় করা খুবই কঠিন।

তবে বর্তমানে গবেষকরা যে নতুন ক্ষুদ্র ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন, তার সাহায্যে মানুষের রক্তে থাকা সেপসিস রোগের অন্যতম উপসর্গ ‘ইন্টারলিউকিন-৬’ দ্রুত সময়ে পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।

গবেষক ডেমিওন করিগ্যান বলেন, পূর্বে যেখানে এই পরীক্ষাটি করতে প্রায় ৭২ ঘণ্টা সময় লাগত, সেখানে এই পরীক্ষাটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রোগ নির্ণয় করতে সক্ষম হবে।

ফলে এটা কেবল মানুষের জীবনই বাঁচাবে না, সেপসিস রোগের কারণে যারা দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে থাকেন তাদের ভোগান্তি লাঘবেও এটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on: