গোডাউন বস্তির আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে বস্তিবাসীর আহাজারি

রাজধানীর বনানীর গোডাউন বস্তিতে লাগা আগুনে শত শত ঘর পুড়ে গেছে। কিছু বুঝে উঠার আগেই ভয়াবহ এই আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে আহাজারি করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

রোববার (২৪ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে বস্তিতে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের চেষ্টায় ৫টা ৩৩ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে বস্তির দুই শতাধিক ঘর ও ঘরে থাকা আসবাবপত্রসহ বস্তিবাসীর ব্যবহৃত জিনিসপত্র পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। সেখান থেকে এখনও ধোঁয়া উঠছে। আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে অনেকেই আহাজারি করছেন। কেউ কেউ ধ্বংসস্তুপের মধ্যেও কিছু অক্ষত আছে কি না, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।

আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে বস্তির বাসিন্দা তৃতীয় লিঙ্গের লিমা বলেন, আমরা ১০ জন দুটি ঘরে থাকতাম। আগুনের সময় আমাদের কয়েকজন ঘরেই ছিল, আর বাকিরা বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে এসে দেখি ঘরসহ সবকিছু পুড়ে গেছে। আমরা ভিক্ষা করে অনেক কষ্ট করে একটি একটি করে জিনিসপত্র কিনেছিলাম। আজকে সব শেষ হয়ে গেল। এখন আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তির আরেক বাসিন্দা আফরোজা বলেন, প্রথম যখন একটি দোকানে আগুন লাগে তখন দৌড়ে ঘর থেকে বের হই। মুহূর্তের মধ্যে আগুন পুরো বস্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। ভেতর থেকে কিছুই আনতে পারিনি। আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। আমরা এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াব?

লিমা ও আফরোজার মতো প্রায় ২০০ মানুষের সবকিছু আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। আগুন এতো দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে যে কেউই ঘর থেকে কোনো আসবাবপত্র বের করতে পারেননি বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা।

এদিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় টি কে গ্রুপের মালিকানাধীন সুপার বোর্ড কারখানায় লাগা আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছে।

গজারিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান বলেন, এখনো আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দুপুর দেড়টার দিকে কারখানাতে আগুন লাগার খবর পাই। প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কাজ করলেও আগুনের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে নারায়নগঞ্জের আদমজী ও কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ফায়ার সার্ভিসের আরও ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে আগুনের সূত্রপাত জানা যাবে।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যতুটুক ঐকমত্য হয়েছে, তা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে: আমীর খসরু Oct 09, 2025
img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ Oct 09, 2025
img
মতামত সমন্বয় করে সরকারকে জানাবে ঐকমত্য কমিশন : আলী রীয়াজ Oct 09, 2025
img
জুবিনের চাচাতো ভাই গ্রেপ্তার, মুখ খুললেন গায়কের স্ত্রী Oct 09, 2025
img
ব্যারিস্টার আহসান আটকে শ্বশুরের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ আদালতের Oct 09, 2025
img
নাইজেরিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপের শেষ আটে আর্জেন্টিনা Oct 09, 2025
img
এখন আর কোনো দল আমাদের হালকাভাবে নেবে না: ফাহিমা Oct 09, 2025
img
রাজনৈতিক দলগুলো গণভোটের ধারণায় নীতিগত ঐকমত্যে এগিয়েছে : জিল্লুর রহমান Oct 09, 2025
img
সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ জনের Oct 09, 2025
img
ম্যারাডোনার ছেঁড়া জার্সি বিক্রির জন্য উঠছে নিলাম মঞ্চে Oct 09, 2025
img
সোমবার গাজায় আটক জিম্মিরা মুক্তি পাবে : ট্রাম্প Oct 09, 2025
img
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা পেলেন দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ Oct 09, 2025
img
‘জাকের ভালো ফর্মে আছে’, ভরসা রাখতে বললেন হৃদয় Oct 09, 2025
img
সুপারিশভিত্তিক পর্যালোচনায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার পরামর্শ Oct 09, 2025
img
বাহিনী প্রধানদের কাছে পাঠানো হলো হাসিনাসহ ৩০ জনের পরোয়ানা Oct 09, 2025
img
গুম সংক্রান্ত কমিশনের তথ্যচিত্র ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ Oct 09, 2025
img
হাসিনার মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে ভারত! Oct 09, 2025
img
রাতারাতি রিপোর্টার থেকে টিভি চ্যানেলের মালিক : ডা. রাকিব হাসান Oct 09, 2025
img
আজ ড. তোফায়েল আহমেদের জানাজা ও দাফন Oct 09, 2025
img
শিগগিরই জানা যাবে জুবিনের মৃত্যুর রহস্য Oct 09, 2025