রপ্তানিকারকদের আয় ৩০ শতাংশ বেড়েছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, তিন বছরে ডলারের মূল্য বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। রপ্তানিকারকদের আয়ও ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নগদ সহায়তা কমে গেলেও রপ্তানিকারকদের আয় টাকার অঙ্কে বাড়ছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) হোটেল রেডিসন ব্লুতে সিআইপি (রপ্তানি ও ট্রেড)-২০২২ কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের দিকে ধাবিত হচ্ছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা ২০২৬ সালে যাত্রা শুরু করব। তিন বছর বিভিন্ন দেশে মার্কেট অ্যাক্সেস পাব। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এসব সুবিধা সীমিত হয়ে যাবে। এ জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে সুযোগ তৈরি করতে এরই মধ্যে প্রায় ২৬ দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির উদ্যোগ নিয়েছি। ভারত, জাপান, চীন, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়ার বাজারে সহজে প্রবেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশের যে অর্জন, বিশেষ করে ২০০৯ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের যে অর্জন তা সারা পৃথিবীতে স্বীকৃত। বাংলাদেশ এই জায়গায় পৌঁছাতে পারবে তা অনেকে বিশ্বাস করত না। ২০০৯ সালে যেখানে রপ্তানি ছিল ১৫ বিলিয়ন ডলারের একটু বেশি, আজকে সেই রপ্তানি আয় প্রায় ৪ গুণ বেড়ে ৬৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। যার জিডিপির আকার প্রায় ৪৬০ বিলিয়নের ওপরে। এই সবগুলো অর্জনই সম্ভব হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে। তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যে লজিস্টিক যে সাপোর্ট দিয়েছেন এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন হয়েছে, সেটি অনস্বীকার্য। আজকে রপ্তানি বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় নিয়ামক শক্তি যোগাযোগ ব্যবস্থা।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা রপ্তানি বাণিজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আমরা ১৪০ জনকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্য সিআইপি প্রদান করছি। সেই সঙ্গে এ দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই তাদের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সুপারিশ মোতাবেক ৪৪ জনকে সিআইপি ট্রেড হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি উদ্যোগের মধ্যে একটি হলো প্রোডাক্ট ডাইভারসিফিকেশন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা দেশে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টসের সঙ্গে লেদার, জুট, টি সেক্টরসহ ফার্মাসিটিক্যালস সেক্টরকে অগ্রাধিকার দিয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। এ বছর প্রধানমন্ত্রী বর্ষপণ্য হিসেবে হস্তশিল্পকে ঘোষণা করেছেন। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ‘একটি গ্রাম, একটি পণ্য’ স্লোগানে তৃণমূলে কারিগরদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে হস্তশিল্পকে একটি বিকল্প রপ্তানি পণ্য হিসেবে তুলে ধরতে চাই। এটি নিয়ে আমাদের অনেকগুলো পরিকল্পনা আছে। বিশ্বের ৭৩টি দেশে আমাদের অ্যাম্বাসি আছে। ২৩টি দেশে আমাদের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর আছে। তাদের মাধ্যমে আগামী ১ বৈশাখে অ্যাম্বাসিতে বৈশাখী মেলা করতে চাই। সেখানে আমরা আমাদের হস্তশিল্প পৌঁছে দিতে চাই। যাতে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যে সেটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।

তিনি বলেন, গতকালই আমাদের টাকার প্রায় ৬ শতাংশ ডিভ্যালুয়েশন করা হয়েছে। রপ্তানিকারকদের সব সময় একটা চাপ ছিল, আমরা যেনো ডলার ডিভ্যালুয়েশন করে এমন একটি পর্যায়ে রাখি যাতে আমাদের রপ্তানি কস্পিটিটিভ হয়। এখন যখন ডিভ্যালুয়েশন হয়েছে, তখন কিন্তু আমাদের রপ্তানিকারকদের আয় বেড়েছে। যদিও আমাদের দেশ আমদানি নির্ভর। তারপরও আমাদের রপ্তানি কম্পিটিটিভনেসের জন্য আমাদের ডিভ্যালুয়েশ করতে হচ্ছে। আমরা আশা করি, এতে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের কম্পিটিটিভনেস বাড়বে। এই সুযোগটা আমাদের রপ্তানিকারকদের কাজে লাগাতে হবে।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দ. কো‌রিয়ায় শারদীয় দুর্গোৎসব পুনর্মিলনি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূতের যোগদান Oct 04, 2025
img
চলতি অর্থবছরে বিদেশি ঋণে আইএমএফের নতুন শর্ত, ইতিবাচক বলছেন বিশ্লেষকরা Oct 04, 2025
img
ডিএনসিসির উদ্যোগে নগর পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন Oct 04, 2025
img
মাজার হলো মিলনমেলা, গণতন্ত্রের আরেক নাম মিলনমেলা : ফরহাদ মজহার Oct 04, 2025
img
‎চট্টগ্রামে টানেলের ভেতরে বাস উল্টে আহত কয়েকজন Oct 04, 2025
img
অক্টোবরের আকাশে উদিত হচ্ছে ‘হারভেস্ট মুন’ Oct 04, 2025
img
সাতক্ষীরায় বিদ্যুৎস্পর্শে প্রাণ গেল জামায়াত নেতার Oct 04, 2025
img
নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি স্থিতিশীল সরকার আসবে : টুকু Oct 04, 2025
img
বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চায় না ভারত: মুশফিকুর রহমান Oct 04, 2025
img
ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, নদীর পাড়ে জেলেদের নিস্তব্ধতা Oct 04, 2025
img
সড়কে টাকা তোলার প্রতিবাদ করায় এএসপির ওপর হামলা Oct 04, 2025
img
ওয়েলসের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে নেই বেলিংহ্যাম, কোচের ব্যাখ্যা Oct 04, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টা ও শরীয়তপুর থানার ওসিকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি Oct 04, 2025
img
সংস্কারের নামে আ. লীগের পুনর্বাসন করা হচ্ছে : রাশেদ খান Oct 04, 2025
img
নারীদের অধিকার সম্পর্কে জনমত সৃষ্টি করতে হবে: বদিউল আলম Oct 04, 2025
img
বিপিএলে অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ফরচুন বরিশাল Oct 04, 2025
img
দেশের ক্রিকেট বয়কটের কড়াবার্তা ক্লাব সংগঠকদের Oct 04, 2025
গান নিয়ে দু-শ্চি-ন্তা-য় কাঙ্গালিনী সুফিয়া Oct 04, 2025
ভারতে ড.ইউনূসের চেহারার মত অসুরের মূর্তি বানানো নিয়ে যা বললেন রিজভী Oct 04, 2025
১ঘন্টা কর্মসূচির পর সচল হলো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক! Oct 04, 2025