জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল শুনানি ১০ নভেম্বর

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল শুনানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের আবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার (৩ নভেম্বর) এ বিষয়ে দুইটি লিভ টু আপিলের ওপর শুনানির জন্য আগামী ১০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি মো. রেজাউল হক। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী কায়সার কামাল।

এদিন দুপুরে হাইকোর্ট বিভাগেও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়। এর অংশ হিসেবে নিজ খরচে পেপারবুক (মামলা বৃত্তান্ত) তৈরির আবেদন করা হয়। পরে হাইকোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। পেপারবুক তৈরি হলে আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। যদিও এ দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের দাবি, বিএনপি চেয়ারপারসনের দণ্ড মওকুফ করা হয়েছে। এরপরও আপিল শুনানির কারণ তিনি (খালেদা জিয়া) আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি মওকুফ করেছেন। সেখানে ক্ষমার কথা আছে। খালেদা জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী না। তিনি অপরাধ করেননি। তিনি ক্ষমাও চাননি। তাই এটি আইনিভাবে মোকাবিলা করতে আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

২০১৯ সালের ১৪ মার্চ আপিল বিভাগে দুইটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেছিলেন খালেদা জিয়া। তার আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন।

সেই সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলে ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

পরবর্তীতে ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন খালেদা জিয়া। এরপর একই বছরের ২৮ মার্চ তার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।

এছাড়াও ৫ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া এবং ১০ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে কাজী কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের আপিল খারিজ করেন আদালত।

হাইকোর্টের ওই রায়ের আগের দিন (২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর) পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত–৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান একটি রায় দেন। ওই রায়ে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই সাজা হয় মামলার অপর তিন আসামিরও।

পরে একই বছরের ১৮ নভেম্বর ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। যা বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারাধীন। সবশেষ রোববার সেই আপিলের শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুতে হাইকোর্টের অনুমতি নেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শুক্রবার যে পদ্ধতিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভাগ্য নির্ধারণ করবে আইসিসি Nov 26, 2024
img
ফাঁদে পা দেব না: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন Nov 26, 2024
img
ব্যাটিং ব্যর্থতা ছাড়াও ম্যাচ হারের জন্য যে কারণ দেখালেন মিরাজ Nov 26, 2024
img
রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন সাবেক আইজিপি ময়নুল Nov 26, 2024
img
চিন্ময় দাস ইস্যুতে ভারতের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকার পাল্টা বিবৃতি Nov 26, 2024
img
বুধবার কারাগার অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা Nov 26, 2024
img
ইসকন আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Nov 26, 2024
img
আইনজীবী হত্যা:সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশ, জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান Nov 26, 2024
img
ভোটার তালিকা হালনাগাদের পরই নির্বাচন: ধর্ম উপদেষ্টা Nov 26, 2024
img
চার বিভাগে নতুন কমিশনার দিলো সরকার Nov 26, 2024