অবরোধ প্রত্যাহার, ৫২ ঘণ্টা পর সচল ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক

অবশেষে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে দীর্ঘ ৫২ ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নিয়েছেন দুমাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকা শ্রমিকরা।

সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে টিএনজেড গ্রুপের আন্দোলনকারী শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার নাজির আহমেদ।

তিনি বলেন, সোমবার দুপুর ১টার পর শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে মোবাইল ফোনে বক্তব্য রাখেন। শ্রম সচিব বলেছেন, সরকার দায়িত্ব নিয়ে আগামী রোববারের মধ্যে ৬ কোটি টাকা অনুদান হিসাবে দেবে। শ্রমিকদের অন্যান্য দাবি ও পাওনা কীভাবে, কবে পরিশোধ করা হবে– তা আলোচনার জন্য শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধি দলকে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সচিব। পর্যায়ক্রমে তাদের পাওনা পরিশোধ করে হবে।

তিনি আরও বলেন, এ সময় শ্রমিকদের মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন সচিব। শ্রমিকদের বলা হয়, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন, আমরা অপেক্ষায় রয়েছি।

গত শনিবার (৯ নভেম্বর) থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত টানা ৫২ ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকরা। বেতন না পেলে মহাসড়ক না ছাড়ার ব্যাপারে অনঢ় অবস্থানের কথা জানান তারা।

পরে এক মাসের বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতিতে বেলা ২টার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান। আগামী রোববার তাদের একমাসের বেতন দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শ্রম সচিব।

এ সময় সেখানে গাজীপুর সদর উপজেলার ইউএনও, সেনাবাহিনী কর্মকর্তা, জিএমম এডিসি, শিল্প পুলিশ ও আন্দোলনকারী শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এ দিকে অবরোধের কারণে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকা, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতকারী যাত্রীরা। পাশাপাশি ক্ষুব্ধ চালক, এলাকাবাসী ও সাধারণ মানুষ। বাধ্য পায়ে হেঁটে গন্তব্যে গেছেন অনেক যাত্রী। টানা ৩ দিন মহাসড়কে অবরোধের ফলে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। পায়ে হেঁটে বা বেশি ভাড়া গুনে বিকল্প পথে পৌঁছতে হয়েছে গন্তব্যে। অপরদিকে, গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও ব্যাহত হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিল্প মালিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই অবরোধের কারণে আশেপাশের দৈনিক গড়ে ১৫ থেকে ২০টি কারখানা ছুটি দিতে হয়েছে। শিল্প মালিকদের বিপুল পরিমাণ অর্থের ক্ষতি হয়েছে। উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এই ঘাটতি পূরণ করতে হলে ভবিষ্যতে তাদের যেকোনো উপায়েই হোক উৎপাদন বাড়াতে হবে।’

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ফেনীতে হাতকড়াসহ পালালেন সাবেক বিএনপি নেতা Jul 16, 2025
img
জ্যাকিকে মজা করে যা বললেন ফারাহ খান Jul 16, 2025
img
জেনে নিন দেশের বাজারে আজকের স্বর্ণ ও রুপার বাজারদর Jul 16, 2025
img
পুমার সঙ্গে ১ বিলিয়ন পাউন্ডের চুক্তি ম্যানচেস্টার সিটির Jul 16, 2025
img
ফিরে দেখা ১৬ জুলাই: কোটা আন্দোলনে ৬ প্রাণ, উত্তাল গোটা দেশ Jul 16, 2025
যাত্রাবাড়ীর নেতা রাকিব? মুখ খুললেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন Jul 16, 2025
img
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ত্রাণপ্রার্থীসহ নিহত আরও ৬১ ফিলিস্তিনি Jul 16, 2025
img
সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পত্তি ক্রোক কেন নয়, কারণ দর্শানোর নির্দেশ আদালতের Jul 16, 2025
img
দুর্যোগে টেলিকম সংযোগ সচল রাখতে সমন্বিত নীতিমালার সুপারিশ Jul 16, 2025
img
মস্কোতে হামলা চালানো উচিত নয় ইউক্রেনের : ট্রাম্প Jul 16, 2025
img
থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি হিসেবে পদায়নে ২২ দফা নীতিমালা তৈরি Jul 16, 2025
img
ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় আরও ৬১ জন নিহত Jul 16, 2025
img
১৮ জুলাইকে ‘জুলাই জাগরণ ও স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ Jul 16, 2025
img
এএফডব্লিউসি প্রশিক্ষণার্থী অফিসারদের পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন Jul 16, 2025
img
দুপুরের মধ্যে দেশের ৭ জেলায় ঝড়ের আভাস Jul 16, 2025
img
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে স্কুল-কলেজে পালিত হবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি Jul 16, 2025
img
‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষ্যে আজ রাষ্ট্রীয় শোক Jul 16, 2025
img
মেঘলা থাকবে ঢাকার আকাশ Jul 16, 2025
img
মোটা অঙ্কের বোনাস পাচ্ছেন চ্যাম্পিয়ন চেলসির প্রত্যেক খেলোয়াড় Jul 16, 2025
img
শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়নে বাউবির সমন্বিত পরিকল্পনা Jul 16, 2025