নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন, সব করা হবে। দায়িত্ব যখন এসেছে, আমাদের সুষ্ঠুভাবে তা পালন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সবার সহযোগিতা। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সিইসি হিসেবে নিয়োগ পেয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, আমাদের নির্বাচনের ইতিহাস হচ্ছে কলঙ্কিত ইতিহাস। ২০১৪ সাল, ২০১৮ সাল ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এ নির্বাচনের জন্য মানুষ গুম, খুন হত্যার শিকার হয়েছে। এ ভোটারাধিকার আদায় করতে গিয়ে গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে কত হাজার হাজার মানুষ আহত হলো, পঙ্গু হলো। হাত, পা, চোখ হারাল। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না করতে পারি, তাহলে তাদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি হবে।
তিনি বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমি একটা ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই জাতিকে। এর জন্য কী কী করতে হবে সেটা আমি বোঝার চেষ্টা করব। কোন কোন জায়গায় হাত দিতে হবে, আমি সেই কাজটা করব।
নাসির উদ্দীন বলেন, আমি সৌভাগ্যবান যে বদিউল আলমের (বদিউল আলম মজুমদার) মতো একজন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে একটা রিফর্ম কমিশন কাজ করছে। সুতরাং, অসুবিধা হবে না সমস্যাগুলো বুঝতে। যেখানে যেখানে লুপহোলস থাকবে, সেগুলো ফ্ল্যাগস দিয়ে বন্ধ করাই হবে আমার কাজ।
সিইসি বলেন, আমি এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নেব, যেখানে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যাকে ইচ্ছে তাকে ভোট দিতে পারবে। সেই ব্যবস্থা আমি করব। সেটাই আমার কমিটমেন্ট এবং চেষ্টা হবে।
নাসির উদ্দীন বলেন, আমি প্রথমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলাম। এরপর পরিকল্পনা বিভাগের সদস্য হয়েছিলাম। বিদ্যুৎ-জ্বালানি এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলাম। ২০১০ সালের জুলাই মাসে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেই।
তিনি বলেন, সচিব হিসেবে তিনটি মন্ত্রণালয় পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগোতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি মনে করেন, নির্বাচন কমিশনের জন্য বহুরকম চ্যালেঞ্জ থাকবে, সামনে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। সেটা বিবেচনায় রেখেই নতুন নির্বাচন কমিশন কাজ করবে।
এর আগে দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং চার কমিশনার নিয়োগ দিয়ে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
অন্য চার কমিশনার হলেন:
১. অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
২. জেলা ও দায়রা জজ (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুর রহমানেল মাসুদ।
৩. যুগ্ম সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) বেগম তাহমিদা আহমেদ।
৪. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ।