হাইকমিশনে হামলা,যে চুক্তি লঙ্ঘন করল ভারত

বাংলাদেশের সমসাময়িক কিছু বিষয় নিয়ে ভারতে একের পর এক বিক্ষোভের মধ্যে এবার ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশি সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালিয়েছে উগ্রপন্থী ভারতীয়রা। এ সময় দূতাবাসে উড়ন্ত বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা হেনেহিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়। এর মাধ্যমে ভারত ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশন, ১৯৬১ লঙ্ঘন করেছে।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এতে ওই কনভেনশন লঙ্ঘনের কথা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীরা আগরতলার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে হামলা চালায়। তারা হিংসাত্মকভাবে মিশনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে, পতাকার খুঁটি ভেঙে ফেলে। এ সময় সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটলেও, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোনো সক্রিয় ভূমিকা পালন করেনি। সহকারী হাইকমিশনের সব সদস্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

বাংলাদেশ সরকার এই ঘটনার জন্য গভীরভাবে ক্ষুব্ধ এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, আগরতলায় হামলার মতো একই ধরনের হিংসাত্মক বিক্ষোভ গত ২৮ নভেম্বর কলকাতায়ও ঘটেছিল।

এতে আরও বলা হয়, যেহেতু কূটনৈতিক মিশনগুলোতে যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ বা ক্ষতি থেকে রক্ষা করা সেই দেশের সরকারের দায়িত্ব, তাই বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারকে এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া এবং ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করার জন্য আহ্বান জানায়। ভারতে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও অকূটনীতিক সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং কূটনৈতিক মিশনে যেকোনো সহিংসতা প্রতিরোধ করতে আহ্বান জানায়।

প্রসঙ্গত, ১৯৬১ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় কূটনীতিকদের আচরণ বিষয়ে জাতিসংঘের উদ্যোগে সই করা ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোম্যাটিক রিলেশন চুক্তির ১২ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব গ্রাহক দেশের সরকারের। এ ছাড়া মিশনের অফিস এলাকায় বিদেশি কূটনীতিক মিশন প্রধানের অনুমতি ছাড়া গ্রাহক দেশের সরকার প্রবেশ করতে পারবে না।

বাংলাদেশ ১৯৭৮ সালে এই চুক্তিতে সই করে এবং এরপর থেকেই এটি বাংলাদেশের জন্যও বাধ্যতামূলক আইন হয়ে দাঁড়ায়।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধন বাতিলের সিদ্ধান্ত Jul 10, 2025
img
ভারতে উপহার হিসেবে ৩০০ কেজি আম পাঠালেন প্রধান উপদেষ্টা Jul 10, 2025
img
পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেবেন প্রবাসীরা: ইসি Jul 10, 2025
img
রেজাল্ট বাজে হয়েছে বা ফেল করেছেন বলে মন খারাপ করবেন না: খায়রুল বাসার Jul 10, 2025
img
টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, দলে ফিরলেন নাঈম-সাইফউদ্দিন Jul 10, 2025
img
সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য লুকালে মার্কিন ভিসা বাতিলের ঝুঁকি Jul 10, 2025
img
আমরা এখনও ঘনিষ্ঠ হই, আমিরের প্রাক্তন কিরণ Jul 10, 2025
img
চিত্রনায়িকা পপির চাচাকে নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ Jul 10, 2025
img
বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সাবেক গভর্নরসহ ৯ শীর্ষ কর্তাদের নথি তলব Jul 10, 2025
img
রাজধানী ঢাকাসহ ১২ জেলায় হতে পারে ঝড় Jul 10, 2025
img
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুই বিষয়ে একমত হয়েছে দলগুলো: আলী রীয়াজ Jul 10, 2025
img
পলিথিন বন্ধে শুরু হচ্ছে যৌথ বাহিনীর অভিযান : পরিবেশ উপদেষ্টা Jul 10, 2025
img
পুরো আসনের ভোটের ফল স্থগিত বা বাতিল করার ক্ষমতা ফেরত চাইল ইসি Jul 10, 2025
img
নির্বাচনের কারণে পেছাতে পারে এবারের বিপিএল Jul 10, 2025
img
এস আলম পরিবারের সিঙ্গাপুরের ব্যাংক হিসাব-শেয়ার ফ্রিজ Jul 10, 2025
img
চ্যালেঞ্জের পর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে গিয়েছি : আসিফ আকবর Jul 10, 2025
img
শাজাহান খানের মেয়ের সম্পদের বিবরণী চাইল দুদক Jul 10, 2025
শাপলা-দোয়েল বাদ, তালিকায় থাকল যেসব প্রতীক Jul 10, 2025
নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে মা-বাবার বিরুদ্ধেই মামলা! কী বলছে আইন? Jul 10, 2025
img
জওয়ানের চরিত্রে অভিনয়ের আগে কঠিন প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সালমান খান Jul 10, 2025