দেশ জুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চলছে। কিন্তু কিছু মানুষ রয়েছেন, যারা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। দেশে থেকে অপশাসহন দূর করতে যারা রাস্তায় নেমেছিলেন, অর্থাৎ জুলাই অভ্যুত্থানে আহত হয়ে তারা এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন হাসপাতালে। তাহলে কি ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বেন তারা?
বাদ পড়ছেন না তারা, বরং হাসপাতালে গিয়েই ভোটার তালিকায় তাদের নিবন্ধন করে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। শুধু ভোটার তালিকায় নাম নিবন্ধনই নয়, এই সেবার পাশাপাশি ঢাকার তিনটি হাসপাতালে আহতদের কারও জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকলে তা সংশোধনের কাজও সারা হচ্ছে। এর আগে আরও দুই হাসপাতালে এ সেবা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৩৮ জনের ছবি ও বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ হয়েছে।
জুলাই বিপ্লবের পরে ইতোমধ্যে আগারগাঁওয়ের চক্ষু হাসপাতাল এবং সেখানকার পঙ্গু হাসপাতালে কাজ করেছে নির্বাচন কমিশন। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে, পিজি হাসপাতালের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও কাজ করবে তারা।
হাসপাতালে আহতদের সাথে যিনি রয়েছেন- বাবা-মা, ভাই-বোন, তারাও এ সেবার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন। যারা এনআইডি কার্ড করেননি এবং হারিয়ে ফেলেছেন অথবা কোনো সংশোধন করছেন তাদেওর এই সেবা দেওয়া হয়। তালিকায় থাকা হাসপাতালের বাইরেও অন্য কোনো হাসপাতালে যদি জুলাই অভ্যুত্থানে আহতরা ভর্তি থাকেন সেখানেও লোক পাঠাবে নির্বাচন কমিশন।
জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১,৮৫০ জন। যাদের মধ্যে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আহত অনেকেই। এই মানুষগুলো দেশের সূর্য সন্তান, এমনটা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন জানায়, হাসপাতালে যেয়ে তালিকাভুক্তির এই পদক্ষেপ আসলে তাদের হক। সামনের নির্বাচনে ভোটার হিসাবে এসব গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের বাদ দেওয়াটা অন্যায়।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী, পুরুষ ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভোটারযোগ্য নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ শুরু হয় ২০ জানুয়ারি, যা চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি অথবা তার আগে যাদের জন্ম, তাদের ভোটার তালিকাভুক্তি ও মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ এবং আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে স্থানান্তরের সুযোগ থাকবে এ হালনাগাদে। নিবন্ধনের জন্য এবার ভোটারযোগ্য প্রায় ১৯ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ হতে পারে বলে মনে করছে ইসি।
টিএ/