বাণিজ্যযুদ্ধে নামল কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র, শুল্কের বিনিময়ে শুল্ক আরোপ!

কানাডার পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মার্ক কার্নি। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো ভাবছেন, কানাডা ভেঙে পড়বে। কিন্তু আমরা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াব, পিছু হটব না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা পাল্টা ব্যবস্থা নেব।’

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করছে যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনে জয়ের পরপরই এ শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ এবং চীনের পণ্যে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের পর তার দল লিবারেল পার্টি থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনের ইচ্ছা জানান মার্ক কার্নি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে ডলারের বিনিময়ে ডলার দিয়ে পাল্টা জবাব দেয়া হবে।

এমন শুল্কের জন্য বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের যে সুনাম, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেন মার্ক কার্নি। তার মতে, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধিতে আঘাত হানবে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। বাড়বে সুদের হারও।

কানাডার পণ্যে শুল্ক আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এক দশকের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো তাদের সবচেয়ে কাছের বাণিজ্যিক অংশীদার কানাডার সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এরই মধ্য দিয়ে বাণিজ্য যুদ্ধে প্রবেশ করল ঐতিহাসিকভাবে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ দুই মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। এদিকে কানাডার আরেক প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘ডলার-প্রতি-ডলার’ পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

কেবল প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীরাই নন, নতুন শুল্কের বিরোধিতা করছেন কানাডার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও। এক বার্তায় তিনি জানান, শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কের বিরুদ্ধে ‘জোরালো’ ও ‘তাৎক্ষণিক’ জবাব দেবে কানাডা।

গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে চীনের পণ্যে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প। গত ২০ জানুয়ারি শপথ নেয়ার আগে এবং পরে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য করার ইচ্ছা জানিয়ে তোপের মুখে পড়েন তিনি। মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে গালফ অফ আমেরিকা রেখে জন্ম দেন বিতর্কের। সেখানেই থামেননি ট্রাম্প। ইউরোপের সায়ত্বশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডকে কিনে নিতে চেয়ে দ্বন্দে জড়ান ডেনমার্কের সঙ্গে।

অভিবাসন নীতি কঠোর করে নিজ দেশের জনগণের সঙ্গেও দূরত্ব বেড়েছে ট্রাম্পের। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক জোট ব্রিকস যদি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলারের বদলে বিকল্প মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করে তাহলে সেসব দেশের পণ্যে শতভাগ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প।

টিএ/

Share this news on: