বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানের এমসিসিআই কনফারেন্স হলে আয়োজিত ‘ভোক্তার কাঁধে বাড়তি করের বোঝা: উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এ কথা বলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য (মূসক) রেজাউল হাসান।
তিনি বলেন, আগে মানুষ ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে চাইতেন না। এখন সেই অবস্থা নেই। মানুষ ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে চান। এটা বাড়বে। কিন্তু যে পর্যায়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেই পর্যায়ে যায়নি। অর্থাৎ ভ্যাটের রেট হতে হবে ব্যবসাবান্ধব। এ জায়গাটায় আমরা পৌঁছাতে পারিনি।
সাবেক এই মূসক সদস্য বলেন,২০১৯ সালে যখন নতুন ভ্যাট আইন করা হয়। আগের আইনে বিভিন্নভাবে করদাতাকে হয়রানির সুযোগ ছিল। সেটাকে ডিজিটালাইজ করার জন্য ভ্যাট আইন করা হয়। বিজনেস প্রসেস ডিজিটালাইজ করতে ভ্যাট আইন প্রস্তুত করা হয়েছিল। আমরা তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম।
রেজাউল হাসান বলেন, আমি খুব দুঃখের সঙ্গে বলছি, তখন নতুন অর্থমন্ত্রী এলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি পরিকল্পনা কমিশনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসলেন এ আইনটা হবে কী হবে না সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। সেখানে সেদিন আমার মনে হলো আমি খুব অসহায়। আমি একা। না বিজনেস কমিউনিটি, না আমার অফিসার কেউ ডিজিটালাইজেশন চায়।
এনবিআরের ওপর দোষ চাপানোর সংস্কৃতি থেকে বের হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ব্যবসায়ীদের তিনি বলেন, আপনার সঙ্গে ভোক্তার সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসা সম্প্রসারণ করুন। সঠিক তথ্য এনবিআরকে দিন। এনবিআরের কাছে কিছু তথ্য আছে, কিন্তু সব তথ্য নেই। সঠিক তথ্য দিয়ে এনবিআরকে সহায়তা করুন।
যেসব পণ্যে কর অব্যাহতির সুযোগ দেওয়া হয়েছে তা উঠিয়ে নিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কর ফাঁকি রোধ করতে হবে। এনবিআরকে ডিজিটালাইজেশন করতে হবে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ডিজিটালাইজেশন করার জোর দাবি তোলে না। আমি একা লড়াই করে নতুন আইন এনেছি। কিন্তু যখন পাস হলো তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে বাধা দেওয়া হলো, এটা ব্যবসাবান্ধব হবে না।
সরকার বাধ্য হয়ে মূসক ও শুল্ক বাড়িয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, একটা পরিবর্তন হয়েছে। ফলে সরকারের কোষাগারে কী রকম টাকা আছে! এ টাকা দিয়ে সরকার আগামী দিনে চলতে পারবে কি? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখা যাবে- হয়তো বা তারা পারবে না। তবে কর বাড়ানোর আগে অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ করলে ভালো হতো।