দীর্ঘ দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণ শুরু হয়েছে। এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন জেলেরা।
শনিবার (১ মার্চ) সকাল থেকে বন বিভাগের পাশ (অনুমতিপত্র) নিয়ে কাঁকড়া আহরণের লক্ষ্যে সুন্দরবনে প্রবেশ করছেন তারা।
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী, কদমতলা, কৈখালী ও কোবাদক ফরেস্ট স্টেশনের আওতায় ২ হাজার ৯শটি নৌকার সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র আছে। এর মধ্যে কাঁকড়া ধরার নৌকা ১ হাজার ৬শটি।
জেলেরা জানান, সুন্দরবনে কোনো সচ্ছল মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া ধরতে যান না। যারা যান, তারা প্রায় সবাই দরিদ্র। দুই মাস নিষেধাজ্ঞা গরিব জেলেদের জন্য অনেক কষ্টের। বন্ধের দুই মাস সরকারিভাবে কোনো ভাতার ব্যবস্থা নেই। মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় তাদের । গত দুই মাস সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরা বন্ধ থাকায় অভাব-অনটনে দিন কেটেছে তাদের।
সুন্দরবনের বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, ‘কাঁকড়া ধরার জন্য জেলেদের অনুমতি দেয়া শুরু হয়েছে। তারা আজ সকাল থেকেই কাঁকড়া ধরতে পারবেন। এসব জেলে সুন্দরবনে শুধু মাছ ও কাঁকড়া শিকার করতে পারবেন।’
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. মসিউর রহমান জানান, সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে দুই মাস জেলেদের কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ ছিল। ১ মার্চ থেকে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে জেলেরা প্রবেশ নিষিদ্ধ অভয়াশ্রম ছাড়া অন্য নদী-খালে কাঁকড়া ধরতে পারবেন।
তবে কেউ যাতে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার অনুমতি নিয়ে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে না পারেন, সে জন্য বনরক্ষীদের টহল ও অন্যান্য কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইঞ্জিনচালিত কোনো নৌকা বা ট্রলার কাঁকড়া পরিবহনের ক্ষেত্রে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
বন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবনের মধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষিত ৩০টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারা বছরই কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ। বাকি অংশের নদী ও খালে অনুমতিপত্র পাওয়া প্রায় ১৫ হাজার জেলে শুধু কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।