ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, “আপনারা জানেন জাতীয় নাগরিক পার্টি আত্মপ্রকাশ করেছে গত ২৮ ফেব্রুয়ারিতে।
অনেকেই মঞ্চে দেওয়া স্লোগান ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’কে সেই অর্থে স্বাগত জানাতে পারছেন না। প্রতিষ্ঠিত তথ্য মতে মাওলানা হাসরাত মোহানী ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগানের ঐতিহাসিক গোড়াপত্তন করেন। পরবর্তীতে ভগত সিংসহ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সব যোদ্ধার স্লোগান ছিল এটি। জুলাই অভ্যুত্থানে শুধু স্বপ্নের বিপ্লবী সরকার গঠন করা সম্ভব হয়নি, তা ছাড়া সব মাত্রার বিচারে এটি বিপ্লব হয়েছে।
যে আকাঙ্ক্ষিত ফল আসতে পারত এবং বাংলাদেশের যেই প্রজাতন্ত্র ঘোষিত হয়েছে প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বুক টানটান করার মাধ্যমে, আমরা সেই আকাঙ্ক্ষিত ফল এবং প্রজাতন্ত্রের দিকে যাত্রা করতে প্রস্তুত। ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগানের মাধ্যমে আমরা জুলাই বিপ্লবকে জারি রাখতে চাই এবং যেসব কাজ এখনো সাধন করা যায়নি সেই কাজকে সাধন করতে চাই। মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর সব সভ্য রাষ্ট্র একটি বিপ্লব সাধনের পর প্রতিকূলতা ফেস করে, অনেক সময় তা বেহাত হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। সভ্য রাষ্ট্রগুলো যেই দ্বন্দ্ব এবং সংঘাত কাটিয়ে তাদের নতুন প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছে আমরাও চাই রাজনৈতিকভাবে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে।
তিনি আরো লিখেছেন, “নব্য উদারতাবাদের যুগে পুঁজিবাদী প্রতিষ্ঠানসমূহের একক আধিপত্য এবং দেশবিরোধী বয়ান বাংলাদেশের মতো দেশকে নয়া সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বলয়ে ফেলে দেয়। আমরা তাই মনে করি ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান এই নব্য সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের মুখে সেই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী সময়ের মতোই প্রাসঙ্গিক। সংবিধানের সব মূলনীতি এই সময়ের সাপেক্ষে প্রশ্নবিদ্ধ, সংবিধানের ভাষা জনসাধারণের দুর্বোধ্য, ৩০০ বছরের কলোনিয়াল শাসনব্যবস্থা সেই পূর্বের ন্যায় জীর্ণ।”
মনে রাখতে হবে, লর্ড ক্লাইভ-পরবর্তী সময়ে যেই শাসনব্যবস্থা বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষে প্রণীত হয়েছে তা কেবল শাসককেই সার্ভ করবে। এটি জনগণকে শোষণ করার জন্য সদাসর্বদা প্রস্তুত।
কেননা শাসনব্যবস্থার মূল কাজ ছিল জনগণের কাছ থেকে খাজনা তোলা এবং দমন করা। এই কলোনিয়াল কাঠামোয় যে বিচার করে বা আইন প্রয়োগ করে তার জবাবদিহি নেই। এটাই রাজনৈতিক উপায়ে কাটিয়ে জনবান্ধব করার নামই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং এর ফলপ্রাপ্ত প্রজাতন্ত্রই হলো নতুন প্রজাতন্ত্র। ২৬ মার্চ যেমন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা হয়েছে, কিন্তু বিজয় হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর, তেমনি শহীদ আবু সাঈদের বুক টান টান করে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে নতুন প্রজাতন্ত্র ঘোষিত হয়েছে, কিন্তু চূড়ান্ত বিজয় আসেনি। আমাদের এক দফা ছিল ফ্যাসিস্টের পতন এবং ফ্যাসিবাদীব্যবস্থার বিলোপ। বিলোপ যেহেতু হয়নি, সেহেতু লড়াই জারি রয়েছে। এটাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমি, আপনি সবার। আর এই প্রতিশ্রুতি দেয় জাতীয় নাগরিক পার্টি।’