‘১০ কোটি টাকা’ ও ‘এমপি’ করার প্রলোভন দেখিয়ে এনসিপিতে যোগ দেওয়ানোর অভিযোগ ‘সর্বৈব মিথ্যা’। এমন দাবি করেছেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। এর আগে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক অভিযোগ করেন, উল্লেখিত প্রলোভন দেখিয়ে তার দলের অন্তত ২০ জন নেতা-কর্মীতে নতুন দলে নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগই অস্বীকার করেছেন সামান্তা শারমিন।
এদিকে দলে নিতে ১০ কোটি টাকা ও এমপি পদের প্রলোভন দেখানোর যে অভিযোগ নুরুল হক করছেন, সে বিষয়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা সর্বৈব মিথ্যা একটা অভিযোগ। এর কোনো ধরনের ভিত্তি নেই। এ ধরনের কথা বলার আগে প্রমাণ সাপেক্ষে বলা উচিত।
এর আগে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এনসিপির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের পরদিন, ১ মার্চ বিকেলে বিজয়নগরে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন নুরুল হক। ওই সংবাদ সম্মেলনে সরকারে থাকা অন্য দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি নুরুল হক অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনকেন্দ্রিক পরিচিত ছাত্রনেতাদের তদবির, নিয়োগ, টেন্ডার-বাণিজ্যসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অসংখ্য ঘটনা ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
নুরুলের ওই সংবাদ সম্মেলন ও বক্তব্য প্রসঙ্গে সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে কথা বলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। তিনি বলেন, ‘নুরুল হক নুর নিজেই তাঁর দল বিলুপ্ত করে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আমরা বলেছি, অবশ্যই আদর্শিকভাবে অনেক দিক থেকে আমাদের মিল আছে। কিন্তু আমরা প্রাথমিকভাবে কোনো একটা দল বিলুপ্ত করে আনতে চাইছি না।’
হান্নানের এই বক্তব্যের জবাবে নুরুল বলেছেন, তিনি এনসিপিতে যোগ দিতে চাননি; বরং এনসিপির নেতাদের তিনি গণ অধিকার পরিষদে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নুরুল হকের দল গণ অধিকার পরিষদ ও দলটির ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের অন্তত ২০ জন নেতা এনসিপিতে যোগ দিয়েছেন, আহ্বায়ক কমিটিতে তাঁরা পদ পেয়েছেন। এঁদের মধ্যে গণ অধিকার পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ পদে ও ভূমিকায় ছিলেন এমন নেতারাও রয়েছেন। এই নেতাদের একটি অংশ গত বছরের ৫ আগস্টের আগে এবং আরেকটি বড় অংশ ৫ আগস্টের পরে নুরুল হকের সঙ্গ ছেড়েছে।
এনসিপি নেতাদের অনেকে মনে করছেন, নিজ দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা এনসিপিতে যোগ দেওয়ায় বড় ধরনের সংকটে পড়েছে নুরুলের দল। এ কারণে নুরুল এনসিপি নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র আরও জানায়, নুরুল হক ছাত্র-তরুণদের নতুন দলের সঙ্গে যুক্ত হতে চান বলেও আলোচনা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি। এরই মধ্যে তাঁর সহচরেরা নতুন দলে চলে গেছেন। সব মিলিয়ে নুরুল হক এখন এনসিপি নেতাদের ওপর চটেছেন।
টিএ/