চট্টগ্রামে একটি দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতি নিয়ে তৈরী হয়েছে কৌতুহল। ২০ ফুট লম্বা আর প্রায় ১২ ফুট উঁচু সাদা রঙের প্রলেপ দেওয়া দেয়াল। সেখানে একটা গাধার পিঠে গালে হাত দিয়ে বসে আছেন একজন “ভাবুক”। “ভাবুকটি” আবার যে-সে ভাবুক নয়। বিখ্যাত ফরাসি ভাস্কর আগুস্ত রোঁদ্যার “দ্য থিংকার” ভাস্কর্যের প্রতিরূপ।
চট্টগ্রামের সিআরবির শিরীষতলায় রেলওয়ের একটি পরিত্যক্ত একতলা অফিস ভবনের দেয়ালে দেখা গেছে ওই গ্রাফিতি। গ্রাফিতির “দ্য থিংকার” বিখ্যাত এই ভাস্কর্য জ্ঞান বা দর্শনের রূপক হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। একই সঙ্গে বুদ্ধিজীবীদেরও প্রতীক হিসেবে দেখা হয় “দ্য থিংকার” ভাস্কর্যটিকে।
মজার বিষয় হলো, গাধার পিঠে গালে হাত দিয়ে বসে আছেন “ভাবুক”। ছবির পেছনে রোমান হরফে “হবেকি” লেখা। যা ২০১৭ সালে ঢাকায় সাড়া জাগানো “সুবোধ” গ্রাফিতির কথাই মনে করিয়ে দেয়।
২০১৭ সালে ঢাকার দেয়ালে আবির্ভূত রহস্যময় “সুবোধ” গ্রাফিতি সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ হয়ে সবার মনের গভীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। এতে লেখা ছিল, “সুবোধ তুই পালিয়ে যা, সময় তোর পক্ষে না”; “সুবোধ তুই পালিয়ে যা তোর ভাগ্যে কিছু নেই”; যা এর সূক্ষ্ম রাজনৈতিক অন্তর্নিহিত-তার কারণে অনেকের কাছে গভীরভাবে অনু’রণিত হয়েছিল।
ঢাকার পর “হবেকি” লোগোযুক্ত গ্রাফিতি প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে দেখা গেল। এখানকার শিল্পী ও শিল্পবোদ্ধারা বলছেন, ঢাকার দেয়ালে আঁকা “সুবোধ” আর চট্টগ্রামের সিআরবির দেয়ালে আঁকা “ভাবুকের” ছবি একই শিল্পীর আঁকা। গ্রাফিতি শিল্পীদের রীতি অনুযায়ী এসব শিল্পকর্মের স্রষ্টাও নিজের নাম গোপন রেখেছেন।
২০২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর রাজনৈতিক অভ্যুত্থানের মধ্যে প্রতিরোধ ও সামাজিক ভাবনার মাধ্যম হিসেবে নিজের গুরুত্ব ফিরে পেতে শুরু করেছে গ্রাফিতি। এর মধ্যে “হবেকি” শিল্পকর্ম ইতোমধ্যে সিআরবিকে একটি উন্মুক্ত গ্যালারিতে পরিণত করেছে। বার্তাটি বোঝার জন্য উৎসুক জনতাকে ভিড় করতে দেখা গেছে।
আরএ/টিএ