বরগুনায় মেয়েকে অপহরণের পর ধর্ষণ করার অভিযোগে বিচার চেয়ে মামলা দায়েরের ৬ দিনের মাথায় হত্যার শিকার হয়েছেন ভুক্তভোগীর বাবা মন্টু চন্দ্র দাস (৩৫)। নিজ বসতবাড়ির পেছনের একটি ঝোপঝাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মন্টু বরগুনা পৌরশহরের জাকির হোসেন নামে এক মুরগি ব্যবসায়ীর দোকানের কর্মচারী ছিলেন। স্বজনদের দাবি ধর্ষণ মামলা করায় অভিযুক্তের স্বজনরা এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরের দিকে বরগুনা সদর থানায় একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মন্টু চন্দ্র দাসের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হালিম। এর আগে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাত ১টার দিকে বরগুনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি করইতলা এলাকার নিজ বাড়ির পেছন থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বরগুনা সদরের একটি পুকুরপাড়‑সংলগ্ন ঝোঁপ থেকে নির্যাতিত মেয়েটির বাবার মরদেহ উদ্ধার করে বরগুনা পুলিশ। পরে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে মরদেহটি পাঠায় পুলিশ।
ভুক্তভোগী পরিবারটি বরগুনা পৌরশহরের বাসিন্দা। নিহতের স্বজনেরা জানান, বাড়ি ফিরতে দেরি করায় ওই যুবকের মোবাইল ফোনে কল দিলে বাড়ির পেছনে পুকুর পাড়ে মোবাইলের আওয়াজ শুনতে পান তাঁরা। পরে সেখানে গিয়ে মরদেহ দেখতে পান। এ সময় মরদেহের পরনের কাপড় ছিল ভেজা, হাতে কামড়ের দাগ ও সারা শরীরে কাদা মাখা ছিল। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নিহতের স্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাতে আমাকে কল দিয়ে জানায় আসতে দেরি হবে। পরে রাত গভীর হলেও বাসায় ফেরেনি। পরে ফোনে কল দিতে থাকলে ঝোপের মধ্যে রিংটোন বাজতে শুনি। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
নিহতের চাচাতো ভাই জানান, গত ৪ মার্চ রাত ৮টার দিকে নিহতের বড় মেয়েকে (১১) অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় সিজীব চন্দ্র রায়সহ ৩ থেকে ৪ জনের বিরুদ্ধে। ধর্ষণের ঘটনায় বাদী হয়ে গত ৫ মার্চ বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন তার বাবা। একই দিন মামলার প্রধান অভিযুক্ত সিজীব চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং পরে তাঁকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। এর পর থেকেই ভুক্তভোগীর পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল অভিযুক্তরা।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি এবং সদর সার্কেল স্যার ঘটনাস্থলে যাই। প্রাথমিক সুরাতহালে বিষয়টি হত্যাকাণ্ড বলে মনে হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এমআর/টিএ