ধূমপান করলে চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে!

অতিরিক্ত ধূমপানে যে ফুসফুসের ক্ষতি হয়, হার্টের সমস্যা হয়, সে তো জানাই আছে। কিন্তু ধূমপান করলে কি চুল পড়ার সমস্যাও বাড়ে?

একাধিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত ধূমপান করলে চুল পড়ার সমস্যা বাড়তে পারে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল অবধি একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সি মহিলা ও পুরুষ, যাঁরা অতিরিক্ত ধূমপান করেন, তাঁদের চুল ঝরে বেশি। এমনও দেখা গিয়েছে, যাঁরা দিনে ১০টি বা তার বেশি সিগারেটে টান দেন, তাঁদের চুল তো ঝরেই, চুলের স্বাস্থ্যও ভাল নয়।

ধূমপানের সঙ্গে চুল পড়ার কী সম্পর্ক?

‘জার্নাল অফ কসমেটিক ডার্মাটোলজি’-তে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। গবেষকেরা দাবি করেছেন, নিকোটিন রক্তে মিশে গিয়ে রক্তজালিকাগুলিকে সঙ্কুচিত করে দেয়। ফলে তার মধ্যে দিয়ে রক্ত ও অক্সিজেনের প্রবাহ বাধা পায়। চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের সরবরাহ না হওয়ার কারণেই, চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে। চুলের গোড়া আলগা হতে শুরু করে। সিগারেট-বিড়ির মূল উপাদানে আছে আর্সেনিক, অ্যামোনিয়া, ডিডিটি, অ্যাসিটোন, ক্যাডমিয়াম, নিকোটিন-সহ প্রায় ৭,০০০ বিষাক্ত জিনিস। এইগুলি রক্তে মিশে গিয়ে শরীরের নানা অঙ্গে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহে বাধা তৈরি করে। ফলে বিষাক্ত রাসায়নিক জমতে জমতে তা টক্সিন তৈরি করে। এই টক্সিনের কারণেই শরীরে প্রদাহ বাড়ে। ত্বকের পিএইচের ভারসাম্যও বদলে যায়। কেবল চুল পড়া নয়, ত্বকের স্বাভাবিক জেল্লাও নষ্ট হতে থাকে।

তামাকের রাসায়নিক মাথার ত্বকের ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস’ বাড়িয়ে তোলে। এই কারণেই চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে।

‘ডার্মাটোলজি’ জার্নাল থেকে আরও একটি তথ্য জানা গিয়েছে, তা হল সিগারেটের রাসায়নিক শরীরে ডাইহাইড্রোটেস্টোস্টেরন (ডিএইচটি) নামক হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, যে কারণে টাক পড়ার সমস্যা বা ‘অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া’-র সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সিগারেট ছেড়ে দেওয়া সহজ নয়। তবে বিকল্প উপায় ভেবে দেখা যেতেই পারে। যেমন তামাক সেবনের ইচ্ছা হলে ভেষজ চায়ে চুমুক দেওয়া যেতেই পারে। অশ্বগন্ধা নামক ভেষজের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি চা খাওয়ার অভ্যাস করলে ধূমপানের নেশা ছাড়া সহজ হবে। পাশাপাশি, ধূমপানের ইচ্ছা হলে মুখে কিছুটা আদা কুচি বা শুকনো আমলকি অথবা জোয়ান রাখতে পারেন। তাতেও কাজ হতে পারে।
এফপি/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
২০ বছরের ছোট অভিনেত্রীর সঙ্গে পর্দায় ফিরছেন রণবীর সিং Jul 08, 2025
img
গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত আরও শতাধিক ফিলিস্তিনি Jul 08, 2025
img
ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাষ্ট্রপতি এখনো দায়িত্বে থাকতে পারেন না : নাহিদ Jul 08, 2025
img
অঘোষিত ফাইনাল আজ, শ্রীলঙ্কায় ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ Jul 08, 2025
img
চাঁদাবাজদের জন্য বিএনপিতে মনোনয়নের কোনো দরজা খোলা নেই : ইঞ্জিনিয়ার সেলিম Jul 08, 2025
img
আজও সহনীয় ঢাকার বাতাস Jul 08, 2025
img
সন্দ্বীপে গৃহহীনদের জন্য ৩৪০ ঘর হস্তান্তর করল নৌবাহিনী Jul 08, 2025
img
মানিকগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছাড়াতে থানা ঘেরাও Jul 08, 2025
img
পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় এসআই প্রত্যাহার Jul 08, 2025
img
সততা দেখে নেতৃত্ব নির্বাচন করুন: হাসনাত Jul 08, 2025
img
রাজধানীতে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে প্রাণ গেল শ্রমিকের Jul 08, 2025
img
ঠাকুরগাঁওয়ে আ.লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেফতার Jul 08, 2025
img
শুল্ক হ্রাস বা বৃদ্ধি নির্ভর করবে বাংলাদেশের ওপর: ট্রাম্প Jul 08, 2025
img
'অঞ্চলভিত্তিক শ্রমিক কল্যাণ কেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে' Jul 08, 2025
img
সরকারি অনুমোদন ছাড়াই চলছে ‘ওয়ার ২’ বুকিংয়ের তোড়জোড় Jul 08, 2025
img
অরণ্যের গর্জনে ফিরছে ‘কান্তারা : চ্যাপ্টার ১’ Jul 08, 2025
img
ধানুশের 'স্যার’ সিনেমার সিক্যুয়েল হবে না জানালেন পরিচালক Jul 08, 2025
img
যৌতুকবিরোধী আইনে বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা নারীর ন্যায়বিচারে বাঁধা: মহিলা পরিষদ Jul 08, 2025
img
দুপুরের মধ্যে সাত জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়বৃষ্টির শঙ্কা Jul 08, 2025
img
দক্ষিণ কোরিয়া-জাপানের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসালেন ট্রাম্প Jul 08, 2025