ধর্ষকদের দ্রুত বিচারের দাবিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে নীরব প্রতিবাদ

“যখন প্রতিবাদের ভাষা থমকে যায়, ঠোঁট কাঁপে নীরবতায়—তখন প্রতিবাদ হোক নিঃশব্দ, তবে আরও তীব্র” এই স্লোগানকে সামনে রেখে রংপুর মহানগরীতে মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে নীরব প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষ। মাগুরায় শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার এবং সারাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের প্রেক্ষিতে এই নীরব কর্মসূচি পালন করা হয়।

নীরব প্রতিবাদ আয়োজনে উপস্থিত সবার চোখ কালো কাপড়ে বেঁধে, মুখে আঙুল দিয়ে ও মোমবাতি জ্বালিয়ে ৫ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এ সময় রংপুরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নারী সংগঠন কর্মী, লেখক-সাহিত্যিক, আইনজীবী, তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠী, স্বেচ্ছাসেবী ও সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেন।

অরাজনৈতিক এই নীরব প্রতিবাদের আয়োজন করেন রংপুরের লেখক ও সাংবাদিক লাবনী ইয়াসমিন লুনী।

আয়োজকদের মতে, চোখ বাঁধার মাধ্যমে আর কোনো ধর্ষণ বাংলাদেশ দেখতে চায় না জানানো হয়েছে। এ ছাড়া মুখে আঙুল দিয়ে বোঝানো হয়েছে, এসব ঘটনায় নারীদের চুপ থাকতে বলা হয় বারবার। নারীরা তখনই চুপ থাকবে যখন গ্যারান্টি দেওয়া হবে, তারা আর ধর্ষিত হবে না। এ ছাড়া নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র নিরাপত্তা দিলে নারীরা চুপ থাকবে।

রংপুরের এই নীরব প্রতিবাদের আয়োজক লাবনী ইয়াসমিন লুনী বলেন, নারী বা শিশু ধর্ষণের কারণ কখনও পোশাক বা মাহরাম হতে পারে না। এটা নিকৃষ্টমনা, বিকৃত রুচিসম্পন্ন মানুষের কাজ। এদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে এবং শুধু বিচার করলেই হবে না, তা দ্রুত কার্যকর করতে হবে। কোনো মেয়ে, বোন, নারী কিংবা গর্ভবতী নারী যেন আর ধর্ষণের শিকার না হয়। এই নিরাপত্তা রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে।

নীরব প্রতিবাদ আয়োজনের আরেক সমন্বয়ক শাহারিয়া সিদ্দিকী বলেন, দেশজুড়ে অনেক বিক্ষোভ ও আন্দোলন হয়েছে। চিৎকার করতে করতে আমরা ক্লান্ত। ইস্যুর পর ইস্যু দিয়ে আছিয়া হত্যাও মানুষ ভুলে যাবে। আমরা চাই না এভাবে একেক সন্তানের মরদেহ দাফন করে ভুলে যেতে। তাই আমরা মুখ বন্ধ করে, কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে নীরব প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যা শক্তিশালী ও তীব্রতর।

এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জায়েদ খানের সঙ্গে আসছেন অভিনেত্রী তানজিন তিশা Jul 03, 2025
img
এডিট করে দে সমস্যা নাই, কিন্তু জাতের কারও ছবি দে: শবনম ফারিয়া Jul 03, 2025
img
কঙ্গনার অভিযোগ, নগ্ন ছবি চাইতেন হৃতিক Jul 03, 2025
img
চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন মম Jul 03, 2025
img
২ এপ্রিলকে অটিজম সচেতনতা দিবস করার সিদ্ধান্ত Jul 03, 2025
img
বাংকার ধ্বংসে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে ভারত Jul 03, 2025
img
চঞ্চলের গুণমুগ্ধ সাদিয়া, পোস্টে প্রকাশ করলেন কৃতজ্ঞতা Jul 03, 2025
img
জোতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করলেন রোনালদো Jul 03, 2025
img
গুমের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা Jul 03, 2025
img
দেশে নারী-শিশু নির্যাতন মহামারি পর্যায়ে : উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ Jul 03, 2025
img
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৮ জন Jul 03, 2025
img
নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে : আব্দুস সালাম আজাদ Jul 03, 2025
img
ইরানের পরমাণু প্রকল্প মাত্র দু’বছর পিছিয়েছে: পেন্টাগন Jul 03, 2025
img
জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, আবারও গ্রেফতার ‘টুন্ডা বাবু’ Jul 03, 2025
img
বিশেষ সম্মাননা পেতে চলেছেন আমির খান Jul 03, 2025
img
ঢাবির আইবিএ ক্যান্টিন সংস্কারের সময় দেয়াল চাপা পড়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু Jul 03, 2025
img
বাবু ভাইয়া ফিরতেই রসিকতা শুরু সুনীল শেঠির! Jul 03, 2025
img
বিসিবির কোচ হিসেবে যোগ দিলেন সাবেক ক্রিকেটার নাজিমউদ্দিন Jul 03, 2025
img
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পারমাণবিক নিরাপত্তা চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন Jul 03, 2025
img
পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে স্থানীয় পর্যায়ে নেতা ও নেতৃত্ব তৈরি হবে না : রিজভী Jul 03, 2025