সিপিবি কার্যালয়ের সামনে সতর্ক পুলিশ

পুরানা পল্টনে ‘মুক্তি ভবনে' কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাড়তি পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে।

লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের ‘দখলের’ ঘোষণায় রাজধানীর পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কার্যালয়ের সামনে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।

শনিবার সকালে দলটির পুরানা পল্টনে ‘মুক্তি ভবনে' কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাড়তি পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে।

এসময় দলটির সামনে কিছু নেতাকর্মীকে বসে থাকতে আর, কিছু নেতাকর্মীকে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে দেখা গেছে।

পালাপাল্টি কর্মসূচিতে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকাল থেকেই সিপিবি কার্যালয় ঘিরে অবস্থান নেয় পুলিশ।

বেলা সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দেন পার্টির নেতারা। তারা ধর্ষণ নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলেন।

সেখানে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “এই সমাজে এবং পুরুষতান্ত্রিক লালসার শিকার মাগুরার শিশুটির যে মর্মান্তিক মৃত্যু, সেজন্য আমরা দেশব্যাপী শোকদিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।

“কর্মসূচি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে কালো পতাকা উত্তোলন কর্মসূচি হবে। এরপর পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিকেলে আমাদের শোকমিছিল বের করব।”

ধর্ষণের শিকার মাগুরার শিশুটির মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে সিপিবির সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, “শিশু ধর্ষণের পর মৃত্যুর এই লজ্জা বাংলাদেশ বুকে ধারণ করতে পারছে না। আমাদের দেশে মূল্যবোধের যে অবক্ষয় হয়েছে, সেটি কল্পনাতীত।

“তনু হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমরাই গোটা দেশে জাগরণ সৃষ্টি করেছিলাম, যদিও ওই ঘটনার বিচার এখনও হয়নি। ফেনীতে নুসরাতকে হত্যা করা হয়েছিল, তার জন্যও আমরা পদযাত্রা করে সোনাগাজীতে গিয়েছিলাম।”

তিনি বলেন, “মাগুরায় শিশুটির উপর যে বর্বর নির্যাতন করা হয়েছে, সেটি আমাদের গোটা জাতির উপর কালিমা লেপন করেছে। আজকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এত অবনতি হয়েছে সরকার এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। একটার পর একটা ঘটনা ঘটছে। তাই আমরা মনে করি নারীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, প্রোপাগাণ্ডা বিভিন্ন মাধ্যমে, পর্যায়ে দেওয়া হচ্ছে, সেটি আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।”

হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে শনিবার গণমিছিল কর্মসূচি দিয়ে রেখেছে বামপন্থি আটটি সংগঠন।

কর্মসূচির বিপরীতে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে পুরানা পল্টনে সিপিবি কার্যালয়কে ছাত্র-জনতার কার্যালয় বানানোর ডাক দেন লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য।

গণমিছিলের উদ্যোগ নেওয়া দলগুলো হল—বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ উদিচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি এবং বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)।

গণমিছিলটি বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে টিএসসিতে এসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিলেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাকী আক্তার।

যদিও শনিবার রাতে আলাদা-আলাদা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছিল উদীচীর একাংশ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং বাসদ সমর্থিত সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।

Share this news on: