যে কারণে দাঁত হলুদ হয়ে যায়

দাঁতের যত্ন নিতে হলে, প্রথমেই জেনে নিতে হবে কি কি কারণে দাঁতের ক্ষতি হয়। আসুন জেনে নেই ঝকঝকে উজ্জ্বল হাসির জন্য কোন কোন বিষয় এড়িয়ে যেতে হবে। 

চিকিৎসকের কথায়, ‘‘আমাদের দাঁতের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ হল এনামেল। যা দাঁতের একদম উপরের স্তর। সেটি ক্ষয়ে যেতে থাকলে নীচের স্তরগুলি উন্মুক্ত হয়ে যায়। এনামেলের তুলনায় সেই স্তরগুলির রং খানিক হলদেটে। ফলে প্রথমেই রক্ষা করতে হবে এনামেলকে। এমনিতে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দাঁতে হলুদ ছাপ পড়ে যায়। এনামেল নষ্ট হতে থাকে। তাই বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা খুব অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু কম বয়সেও দাঁতে দাগ পড়ে যাওয়ার নানাবিধ কারণ রয়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেড়ে গিয়েছে এই সমস্যা।’’

দাঁতের উপরের স্তর ক্ষয়ে যায় কেন?
মানুষের জীবনযাত্রা, খাওয়াদাওয়া, দৈনন্দিন ব্যবহারে এনামেলের পরত পাতলা হতে থাকে। এই ঘটনা প্রায়শই বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়। কিন্তু কম বয়সেও এই সমস্যা কেন হয়, সেটিই জানতে হবে।

১. এর প্রধান কারণ, আমাদের খাওয়াদাওয়া। যিনি তেল-মশলাজাতীয় খাবার বেশি খান, তাঁর দাঁতে খুব তাড়াতাড়ি হলুদ ছোপ পড়ে যায়। লাল চা বা কালো কফির অত্যধিক সেবনের ফলেও এই ঘটনা ঘটতে পারে।

২. যাঁদের শরীরে আয়রনের পরিমাণ কম, তাঁরা যদি আয়রনের সাপ্লিমেন্ট বেশি খেতে থাকেন, তাতেও দাঁতের সাদা রং দূর হয়ে যায়।

৩. আজকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাউথওয়াশ বিক্রি হয়। সেগুলি দিয়ে বহু দিন ধরে রোজ কুলকুচি করতে থাকলে দাঁতে হলদে ভাব দেখা দেয়।

৪. এ ছাড়া ধূমপান, পানমশলা, পানের মতো নেশার দ্রব্য ব্যবহারে দাঁতে কালো কালো ছোপ পড়ে যায়।

৫. কিছু বিরল কারণ রয়েছে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার পিছনে। যাঁদের থুতু গাঢ় বা ঘন হয়, তাঁদের দাঁত তুলনায় দ্রুত রং বদলাতে পারে। দাগ বেশি পড়ে তাঁদের দাঁতে।

৬. যাঁরা গ্যাস-অম্বলে বেশি ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দেয়।

৭. এ ছাড়া অতি সাধারণ কারণও রয়েছে। ঠিক মতো দাঁত না মাজলে হলদেটে হয়ে যায় দাঁত।

হলুদ বা কালো ছোপ দূর করার উপায় কী?
চিকিৎসকের মতে, সবার প্রথমে যে যে কারণে দাঁতের রং বদলাচ্ছে, সেই কারণগুলির থেকে মুক্তি পেতে হবে। কারও ক্ষেত্রে অভ্যাস বদলানো, কারও আবার স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া। তবে স্কেলিং বা দাঁত পরিষ্কার করানো খুবই জনপ্রিয় একটি উপায়।

‘‘বছরে এক বার করে স্কেলিং করানোর পরামর্শ দিই আমরা। যাঁদের বার বার রং বদলাতে থাকে, তাঁদের জন্য এই উপায় খুবই কার্যকরী। তবে যদি দেখা যায়, স্কেলিংয়ের এক বছর পর অতটাও হলুদ ছোপ পড়েনি, তবে তাঁর ক্ষেত্রে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করা যেতে পারে। তবে বছরে এক বার করে অন্তত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দেখিয়ে নেওয়া উচিত।’’

এসএম/টিএ

Share this news on: