ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বিনতা রানী (২৮) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দেবর ও শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের গনেশপাড়া গ্রামে এ ঘটনা। গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, মেয়েকে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়েছে দেবর ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
গৃহবধূ বিনতা রানী উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের বোয়ালধার গ্রামের বুধুরাম পালের মেয়ে ও সবুজ চন্দ্রের স্ত্রী। ৬ বছরের পুষ্পা নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে তার।
আটক দেবর সুমন চন্দ্র (২৩) ও তার মা বাসন্তী রানী ধনতলা ইউনিয়নের গনেশপাড়া গ্রামে সেবারামের স্ত্রী।
গৃহবধূর পরিবার ও পুলিশ জানায়, আট বছর আগে উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের গনেশপাড়া গ্রামের সবুজ চন্দ্রের সঙ্গে বিনতা রানীর বিয়ে হয়। দুই বছর পর কন্যা সন্তান জন্মের পর জীবিকা নির্বাহের জন্য ঢাকায় যাতায়াত শুরু হয় গৃহবধুর স্বামীর। গোপনে ২ বছর হলো আরেকটি বিয়ে করেন গৃহবধুর স্বামী সবুজ চন্দ্র। এরপর থেকে বাড়িতে আসা বন্ধ করে দেয় স্বামী সবুজ।
এদিকে প্রায় এক বছর ধরে দেবর সুমনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন গৃহবধূ বিনতা রানী। ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়েন তিনি। বিষয়টি দুই পরিবারের মধ্যে জানাজানি হলে গতকাল বৃহস্পতিবার দুই পরিবারের মধ্য বৈঠক হয়। বৈঠকে স্বামীকে তালাক দিয়ে দেবরের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার চাপ দেন। এটা সিদ্ধান্তের জন্য এক সপ্তাহ সময় নেয় বিনতা রানীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
বিনতা রানীর বাবা বুধুরাম জানান, সকালে মেয়ে ফোন করে খুব কান্নাকাটি করছিল। মোবাইলে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু ঘণ্টা খানেক পরে শুনতে পেলাম মেয়ে আর নেই। ছুটে গিয়ে দেখি মেয়ের মরদেহ বারান্দায় পড়ে আছে। মেয়েটা অনেক কষ্ট করেও সংসার করতে চাইছিল। পরিবারটি শেষ করে দিলো মেয়েটাকে।
পরেশ চন্দ্র অভিযোগ করে জানান, আমার বোনকে কৌশলে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছিল দেবর সুমন ও তার পরিবারের লোকজন। আমরা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই মরদেহ নামিয়ে নেয় বারান্দায়। আমার বোনের পেটের বাচ্চা নষ্টের চেষ্টা করেছিল পরিবারটি। ব্যর্থ হয়ে মেরেই ফেলে। আমি দেবর-স্বামী-শাশুড়িসহ জড়িতদের বিচার দাবি করছি।
বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের ওসি শওকত আলী সরকার জানান, গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিক দেবর ও শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে আটকের আগে ভাবির সাথে পরকীয়া প্রেম ও তার সঙ্গে মেলামেশায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার কথা স্বীকার করেছেন সুমন চন্দ্র।
আরএ/টিএ