চলতি বছরের রমজান মাসে শবে কদর ও জুমাতুল বিদা একই দিনে পালন করবেন বাংলাদেশের মুসলমানরা। এবার জুমাতুল বিদা অনুষ্ঠিত হবে ২৮ মার্চ শুক্রবার। একই দিন বাংলাদেশের মানুষেরা ২৭তম রোজা পালন করবেন। ২৭তম রোজা শুরু হবে এর আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে। কারণ, আরবি তারিখের হিসাব শুরু হয় সন্ধ্যা থেকে। শুক্রবার খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জীর ২৮ তারিখ হলেও এ দিন ২৭ তম রমজানের রোজা পালন করা হবে।
বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে ২৭ রমজান শবে কদর পালন করা হয়। তবে হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী প্রতি বছর একই দিনে শবে কদর অনুষ্ঠিত হয় না। সহীহ বিশুদ্ধ হাদিস থেকে জানা যায় যে, লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশ দিনের যে কোন বিজোড় রাত্রিতে হয়ে থাকে। বিভিন্ন সহীহ হাদীসে ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখে লাইলাতুল কদর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখিত আছে।
হাদিসে এ কথাও উল্লেখিত আছে, যে কোন একটি নির্দিষ্ট বিজোড় রাত্রিতেই তা হয় না। অর্থাৎ কোন বছরে ২৫ তারিখে হল, আবার কোন বছরে ২১ তারিখে হল এভাবে। লাইলাতুল কদরের সওয়াব পেতে চাইলে ৫টি বিজোড় রাত্রেই তালাশ করতে হবে।
আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর। (বুখারি, ২০২০)
রমজানের শেষ জুমাকে জুমাতুল বিদা হিসেবে পালন করা দিনটি মুসলিম উম্মাহর কিছু মানুষের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বছরের শ্রেষ্ঠ মাস রমজানের শেষ জুমা হওয়ার কারণে এটি তাদের মতো অনেকের কাছে মর্যাদাশীল।
তবে জেনে রাখা উচিত, জুমাতুল বিদা নামে কোনো পরিভাষা শরিয়তে নেই। এটি পরবর্তী সময়ে আবিষ্কৃত একটি বিষয়। এছাড়াও এই দিনে কোনো নির্দিষ্ট নামাজ ও বিশেষ কোনো আয়োজন যদি কেউ করে থাকেন, সেটাও নব আবিষ্কৃত হিসেবে গণ্য হবে; শরিয়তে যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।
আর কোরআন ও হাদিস এবং সালফে সালেহিন, মুসলিম মনীষী ও ইসলামিক জ্ঞানবেত্তাদের প্রকৃষ্ট মতামত হলো- আল্লাহ তাআলা বান্দার ওপর নামাজ-রোজা ও অন্যান্য যেসব ইবাদত ফরজ করেছেন, সেগুলোর ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া জরুরি। এছাড়াও রাসুল (সা.) যেসব সুন্নত ও নফলে অভ্যস্ত ছিলেন, সেগুলোর প্রতি আন্তরিক হওয়া ও নিজের জীবনে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা কর্তব্য। আর এর বাইরে যা কিছু মানুষ দ্বীনের নামে আবিষ্কার করেছে, তা বিদআত ও পরিত্যাজ্য।
এসএন