সাংবাদিকতার জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ হচ্ছে

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। আজ (শনিবার) যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রতিবেদন জমা দেন।
 
প্রতিবেদন জমা হওয়ার পর ব্রিফিংয়ে প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন মিশন প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ।সংস্কার কমিশন যেসব সুপারিশ করেছে তার মধ্যে একটি হলো— সাংবাদিকতার জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ।
 
কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে— সব ধরনের গণমাধামকে একই তদারকি বা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের আওতায় নিয়ে আসার পরামর্শ উঠে এসেছে অধিকাংশ মতবিনিময় সভায়। সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার জন্য বর্তমানে সচল বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এবং সম্প্রচারমাধ্যম ও অনলাইনের জন্য বিগত সরকারের প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের সমন্বয়ে বাংলাদেশ গণমাধ্যম কমিশন গঠন করা যেতে পারে।

এ প্রতিষ্ঠানকে সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গণমাধ্যমের স্বনিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব পদ্ধতি ও প্রতিষ্ঠান কার্যকর ভূমিকা রাখছে তার অভিজ্ঞতার আলোকেই এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা দরকার।
 
এটি যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সেজন্য প্রতিষ্ঠানটিকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে হবে। সরকারি অর্থের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার অর্থই হচ্ছে কোনো না কোনোভাবে সরকার কর্তৃক প্রভাবিত হওয়া। সেজন্যে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য তাদের আয় থেকে নির্ধারিত হারে চাঁদা নির্ধারণের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ের সংস্থান করা যেতে পারে।

ভারতের প্রেসকাউন্সিল প্রতিটি সংবাদপত্রের ওপর আনুপাতিক হারে লেভি আদায় করে থাকে। তারা সরকারের অনুদানও গ্রহণ করে। ইন্দোনেশিয়ায়ও মিডিয়া কাউন্সিল সরকারের সহায়তা গ্রহণ করে, তবে তা নিঃশর্ত হতে হয়। বাংলাদেশেও প্রস্তাবিত গণমাধ্যম কমিশনে সরকারি সহায়তা নেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত, তবে তা হতে হবে নিঃশর্ত অনুদান।

গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে বাংলাদেশ গণমাধ্যম কমিশন যেসব দায়িত্ব পালন করবে তার মধ্য আছে—

ক. প্রকাশক ও সম্পাদকের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা নির্ধারণ যাতে ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত এবং ঋণখেলাপিরা গণমাধ্যমে মালিক/সম্পাদক না হতে পারে।

খ. সাংবাদিকতার জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ

গ. সারা দেশে কর্মরত সাংবাদিকরা গণমাধ্যম কমিশনে নিবন্ধিত হবেন এবং কমিশন তাদের একটি তালিকা সংরক্ষণ করবে।

ঘ. সাংবাদিকদের জন্য একটি আচরণবিধি (কোড অব কন্ডাক) প্রণয়ন করবে ও তার প্রতিপালন নিশ্চিত করবে।

ঙ. সম্প্রচার মাধ্যম (টিভি ও রেডিও) এবং অনলাইন পোর্টালের লাইসেন্স প্রদানের সুপারিশ ও তার শর্ত প্রতিপালন নিশ্চিত করবে।

চ. ভুল বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীর অভিযোগের প্রতিকার। এটি সম্ভব হলে সংবাদমাধ্যমের প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় একটি গুরত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হবে এবং গণমাধ্যম মানুষেরর আস্থা অর্জনে সক্ষম হবে।  

এমআর/এসএন


Share this news on: