মক্তবের কক্ষে মিলল ভিজিএফের ৩,৮০০ কেজি চাল,সাক্ষী হিসেবে পুলিশ হেফাজতে ইমাম

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) কর্মসূচির ৩,৮০০ কেজি (৩.৮ টন) চাল উদ্ধার করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে উপজেলার কালিগঞ্জ বাজার মসজিদের ইমাম পরিচালিত একটি মক্তবের অফিস কক্ষ থেকে এসব চাল উদ্ধার করা হয়।নাগেশ্বরী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, চাল উদ্ধারের ঘটনায় সরকারপক্ষকে বাদী হয়ে নিয়মিত মামলার আদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ ঘটনায় আসামি হিসেবে কাউকে পাওয়া না গেলেও মসজিদের ইমাম ইসমাইল হোসেনকে সাক্ষী হিসেবে পুলিশ হেফাজতে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জানা গেছে, শনিবার দুপুরে স্থানীয় জনতা মক্তবের অফিস কক্ষে এসব চাল আটক করে প্রশাসনকে খবর দেয়। পরে সহকারী কমিশনার মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এসব চাল উদ্ধার করা হয়।

কালিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে অতি দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য ইউনিয়নটিতে ৪৭.২৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব চাল দরিদ্র ও অসহায়দের মাঝে ১০ কেজি হারে বিতরণ করার কথা।

তবে অভিযোগ উঠেছে পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বররা এসব চালের একটি বড় অংশ সুবিধাভোগীদের না দিয়ে পাইকার এবং ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। সুবিধাভোগীদের নামে কার্ড না দিয়ে ফাঁকা কার্ড বিতরণ করেছেন যাতে যে কেউ এসে চাল তুলে নিতে পারে। এর ফলে চাল ব্যবসায়ীরা তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে চাল তুলে নিয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় চাল ব্যবসায়ীরা কয়েকশ কার্ডের বিপরীতে এসব চাল উত্তোলন করে বাজার মসজিদের ইমাম ইসমাইল হোসেনের মক্তবের অফিসে রেখেছেন। স্থানীয়রা টের পেয়ে তা আটক করে প্রশাসনকে খবর দেয়।

তবে কালিগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম কার্ড বা চাল বিক্রি করার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “কিছু কার্ড নাম ছাড়া ফাঁকা বিতরণ করা হয়েছে এটা সত্য তবে তা সাধারণ মানুষ পেয়েছেন। ভিজিএফের সুবিধাভোগীরাই চাল বিক্রি করে থাকতে পারে। আমার এখানে কোনো দায় নেই।”

সহকারী কমিশনার মাহমুদুল হাসান জানান, চাল উদ্ধার ও জব্দ করে থানায় নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা রুজু করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাক্ষী হিসেবে ইমামকে থানায় নেওয়া হয়েছে। বিপুল পরিমাণ চাল কীভাবে তার পরিচালিত মক্তবের কক্ষে মজুত করা হলো সে বিষয়ে তার সাক্ষ্য নেবে পুলিশ। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হলে প্রকৃত অপরাধী শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।


এমআর/এসএন


Share this news on: