ধোনির দ্রুত স্টাম্পিং -এর রহস্য কি?

মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বনাম চেন্নাই সুপার কিংসের ম্যাচ চলছে চেন্নাইয়ে। প্রথমে ব্যাট করতে নামে মুম্বই। প্রথম ওভারেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। দলের হাল ধরার দায়িত্ব ছিল সূর্যকুমারের উপর। কিন্তু ক্ষান্ত থাকতে হয়েছে ২৯ রানেই। যার নেপথ্যে ৪৩ বছর বয়সের ধোনির দুর্দান্ত উইকেট কিপিং।

মুম্বইয়ের ইনিংসের ১১তম ওভারে বল করছিলেন নুর আহমেদ। আফগানিস্তানের স্পিনারের বলে ক্রিজ় ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়েছিলেন সূর্য। কিন্তু তিনি বলের নাগাল পাননি। উইকেটের পিছনে তৈরি ছিলেন ধোনি। বল হাতে আসার মাত্র ০.১২ সেকেন্ডের মধ্যে ভেঙে দেন উইকেট। যে সময় ধোনি স্টাম্পড করেন, তত ক্ষণে সূর্যের ব্যাট স্পিন শেষ হয়নি। পা ক্রিজ়ে ঢোকানো তো অনেক দূর।

মাত্র ০.১২ সেকেন্ডে সূর্যকুমার যাদবকে স্টাম্পড করেছিলেন ধোনি। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সেই ক্ষিপ্রতা দেখে অবাক সকলেই। কিন্তু তিনি কী ভাবে এই গতিতে স্টাম্পড করছেন? বাকিদের চেয়ে কোথায় আলাদা ধোনি?

এত দ্রুত স্টাম্পড করার কারণ ধোনির উইকেটরক্ষার ধরন। ভরত সুন্দর্শনের লেখা বইয়ে ধোনির উইকেটরক্ষার ব্যাখ্যা করা আছে। সেখানে তিনি লিখেছেন, “সাধারণত উইকেটরক্ষকের হাতে যখন বল আসে, তখন সে নিজের হাত শরীরের দিকে টেনে নেয়। তাতে বলের গতি ক্রমশ কমে যায়। বল যাতে হাত থেকে না বেরিয়ে যায়, সেই কারণেই এই পদ্ধতিতে বল ধরেন উইকেটরক্ষকেরা।

কিন্তু ধোনি সেটা করেন না। ধোনি হাত সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। অর্থাৎ, বল যে দিকে থেকে আসছে, ধোনির হাত সেই দিকেই এগিয়ে যায়। সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হচ্ছে, ধোনির হাত সেই সময় শক্ত (স্টিফ) হয়ে যায় না। অর্থাৎ, ও বেশি শক্তি প্রয়োগ করে না। কারণ বেশি শক্তি দিয়ে বল ধরতে গেলে, হাতে লেগে বল বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বল ধরার সময় ধোনি হাত হালকা রাখে। তাতে বলের গতি কিছুটা কমে যায়। শুধু স্পিনারেরা নন, অনেক পেসারের বিরুদ্ধেও উইকেটের কাছে দাঁড়াতে দেখা যায় ধোনিকে।”

ধোনি যদিও মনে করেন স্টাম্পিংটি হঠাৎ করে হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, “ওই স্টাম্পিং হঠাৎ করে হয়ে গিয়েছে। যদি খুঁটিয়ে দেখেন তা হলে বুঝবেন, ওটা দেখে মনে হবে ট্রাকের পিছন থেকে একটা চালের বস্তা যেন হঠাৎ করে পড়ে গিয়েছে। বলটাকে ভাল করে দু’হাতে ধরতে পারছি কি না, সেটাই আসল। আমি বরাবর দু’হাতে ক্যাচ ধরতে ভালবাসি। তাই এ ধরনের স্টাম্প করতে ভাল লাগে। কখনও আমাকে দেখবেন না উইকেটের পিছনে খুব ঝাঁপাচ্ছি বা এক হাতে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরার চেষ্টা করছি। কিপার হিসাবে আমি বেশ শান্ত এবং সেটাই ভাল লাগে আমার।”

এসএম/টিএ

Share this news on: