যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হওয়া ভয়ংকর প্রাণঘাতী মাদক ফেন্টানিল তৈরির কাঁচামাল সরবরাহে চীনের সঙ্গে এবার ভারতও জড়িত বলে দাবি করা হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, মঙ্গলবার মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডের দপ্তর থেকে প্রকাশ করা হয় এই বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন প্রতিবেদন (‘অ্যানুয়াল থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট’বা এটিএ)।
এতে বলা হয়েছে, ভারত ও চীন অপরাধী চক্রগুলোর কাছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ফেন্টানিল তৈরির রাসায়নিক কাঁচামাল সরবরাহ করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রগুলো প্রায়ই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষোভাবে রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেমন: চীন ও ভারত। মাদক পাচারকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক ও কাাঁচামালের উৎস এই দেশগুলো।
অবৈধ ফেন্টানিল তৈরির রাসায়নিক এবং পিল তৈরির হাতিয়ারের প্রধান উৎস চীন, এরপরই রয়েছে ভারত।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম ফেন্টানিলের মতো মাদক তৈরির রাসায়নিক সরবরাহের অভিযোগে চীনের সঙ্গে ভারতকেও এক কাতারে দাঁড় করিয়েছে।
অথচ গত বছরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মেক্সিকোর মাদক চক্রগুলো কয়েকটি দেশ থেকে কম পরিমাণ রাসায়নিক পায়, এর মধ্যে একটি দেশ ভারত। আর চীনকে বলা হয়েছিল প্রধান সরবরাহকারী দেশ।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার এই প্রতিবেদন এমন এক সময়ে প্রকাশ হল যখন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ফেন্টানিল সমস্যাকে তার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে নিয়েছেন।
এমাসের শুরুতে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিলের মহামারী নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তার প্রশাসন বিশ্রাম নেবে না। কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক শুল্কযুদ্ধ শুরু হওয়ার নেপথ্যে অন্যতম মূল কারণও এই ফেন্টানিল।
গত ১ ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প ফেন্টানিল পাচারে ব্যর্থতার অভিযোগে চীনের পণ্যে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। ওদিকে, সীমান্ত দিয়ে ফেন্টানিল পাচার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যেও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।
তাছাড়া, ‘লিবারেশন ডে’ শুল্কের আওতায় ট্রাম্প আরও কিছু দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন, যা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে ২ এপ্রিল থেকে। তবে ভারত এই শুল্ক এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা ত্বরান্বিত করার চেষ্টা নিয়েছে।
ফেন্টানিলকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী মাদক হিসেবেই গণ্য করে যুক্তরাষ্ট্র। এ মাদক পাচারের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১২ মাসে ৫২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এসএম/টিএ