নতুন পরমাণু চুক্তিতে উপনীত হতে তেহরানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন ইরান তার জবাব দিয়েছে।
দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনায় বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ইরান ‘ওমানের মাধ্যমে যথাযথভাবে’ চিঠিটির জবাব পাঠিয়েছে।
“আমাদের নীতি এখনও সর্বোচ্চ চাপ ও সামরিক হুমকির মুখে সরাসরি আলোচনায় না জড়ানো, তবে অতীতের মতো, পরোক্ষ আলোচনা চলতে পারে।
“আমাদের প্রতিক্রিয়ায় আমরা বর্তমান পরিস্থিতি ও ট্রাম্পের চিঠি সম্পর্কে আমাদের মতামত বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছি,” আরাগচি এমনটাই বলেছেন বলে ইরনার বরাত দিয়ে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
ইরান ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত রাখার একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদের মাঝামাঝি, ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে তেহরানের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার পাশাপাশি নিত্যনতুন চাপ প্রয়োগ শুরু করেন।এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানও চুক্তির শর্ত পূরণ থেকে সরে আসে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়াতে থাকে।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ বলেছে, ইরান যে পরিমাণ উপকরণ জড়ো করেছে তা দিয়ে একাধিক পারমাণবিক বোমা বানানো সম্ভব, তবে তেহরান এখন পর্যন্ত কোনো বোমা বানানোর উদ্যোগ নেয়নি।
ইরান বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ, এর কোনো সামরিক উদ্দেশ্য নেই।দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের’ অংশ হিসেবে ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। পাশাপাশি ৮৫ বছর বয়সী ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে একটি চিঠিও লিখেছেন, যদিও ওই চিঠিতে কী ছিল তা জানা যায়নি।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, চলতি মাসের ১২ তারিখ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঊর্ধ্বতন কূটনীতিক আনোয়ার গারগাশ তেহরান সফরে গিয়ে ইরানি কর্মকর্তাদের হাতে ট্রাম্পের চিঠিটি দিয়ে আসেন।
ইরানের জবাবে কী কী আছে তাও জানা যায়নি। তবে তেহরান এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের ‘চুক্তি করো, নয়তো সামরিক পরিণতির মুখোমুখি হও’ এই হুঁশিয়ারিকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না।
এদিকে বৃহস্পতিবার খামেনির উপদেষ্টা কামাল খারেজি বলেছেন, তেহরান আলোচনার ‘সব দরজা বন্ধ করেনি’।“অন্য পক্ষের মূল্যায়ন যাচাই করে দেখা, নিজদের শর্তের কথা বলা এবং এরপর যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় প্রস্তুত,” তিনি এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
এমআর/টিএ