ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বাধিয়ে ক্ষমতায় টিকে রয়েছেন। তবে টানা যুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে সে দেশের সাধারণ ইসরায়েলিরা। এ নিয়ে নেতানিয়াহুকে নানাভাবে চাপ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত লাখ লাখ ইসরায়েলি নেমে এসেছেন রাস্তায়। নেতানিয়াহুবিরোধী বিক্ষোভে অচল করে দিয়েছে দেশ। কিন্তু ক্ষমতার মোহে নেতানিয়াহু এতটাই অন্ধ হয়ে গেছেন যে, নিজ দেশের নাগরিকদের ওপরেই শক্তি প্রয়োগ করছেন।
নেতানিয়াহু বাহিনীর রোষানলে পড়লেও রাজপথ ছাড়ছেন না ইসরায়েলি বিক্ষোভকারীরা। আর এভাবেই গৃহযুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছে। নেতানিয়াহু যদি এখনই পিছু না হটেন তাহলে খুব শিগগিরই ইসরায়েলে গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইসরায়েলি রাজনীতিক ন্যাশনাল ইউনিটি পার্টির চেয়ারম্যান বেনি গান্টজ।
দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, দেশকে সম্ভাব্য এই গৃহযুদ্ধের হাত থেকে বাঁচাতে বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিনের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন গান্টজ। সাক্ষাতে তিনি বিচারমন্ত্রীকে ইসরায়েলে গৃহযুদ্ধের ব্যাপারে সতর্ক করে দেন। একইসঙ্গে বিচার ব্যবস্থার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের সুযোগ সংক্রান্ত যে বিতর্কিত আইন পাস করতে চাইছেন নেতানিয়াহু সে বিষয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন। গান্টজ জানিয়েছেন, আইনটি চূড়ান্ত ভোটে তুললে ভুল করবেন তিনি।
যুদ্ধ ছাড়াই গাজা থেকে ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু নেতানিয়াহু ইচ্ছা করেই যুদ্ধ টিকিয়ে রেখেছেন। কারণ যুদ্ধ থেমে গেলেই দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে ঢুকতে হতে পারে তাকে। এজন্য গণবিক্ষোভের মুখেও যুদ্ধ জিইয়ে রেখেছেন নেতানিয়াহু। এর বাইরেও দেশের ভেতর নিজের ক্ষমতা আরও পাকাপোক্ত করার সব বন্দোবস্তও করে ফেলেছেন তিনি।
এতে খোদ ইসরায়েলের ভেতর শুরু হয়েছে অস্থিরতা। বিচার ব্যবস্থার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের জন্য বিতর্কিত একটি আইন পাস করতে চাইছেন নেতানিয়াহু। এর ফলে বিচার ব্যবস্থার ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন তিনি। এ নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন গান্টজ।
অবশ্য নেতানিয়াহুর বিচারমন্ত্রী গান্টজের সতর্কবার্তাকে গ্রহণ করবেন বলে মনে হচ্ছে না। তার ভাষায়, দেশের ভেতর যে বিভেদ রয়েছে, তা দূর করতেই এই আইন পাস করার চেষ্টা চলছে। লেভিনের সঙ্গে ওই বৈঠকের আগে নেতানিয়াহুকে চিঠিও লিখেন গান্টজ। নেতানিয়াহু যেন এই আইন নিয়ে আর অগ্রসর না হন, সে বিষয়েও সতর্ক করে দেন তাকে। কিন্তু গান্টজের কথায় কান দিচ্ছেন না নেতানিয়াহু।
আরএ/টিএ