ঈদের দ্বিতীয় দিনে জাতীয় চিড়িয়াখানায় মানুষের ব্যাপক ভিড় হয়েছিল। প্রবেশ গেটের সামনের জায়গা ছিল জনসমুদ্র। প্রায় একই অবস্থা ছিল ভেতরেও। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ দিন প্রায় দুই লাখ মানুষ চিড়িয়াখানায় এসেছিলেন।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) জাতীয় চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখা গেছে, মিরপুরের সনি সিনেমা হল থেকে চিড়িয়াখানা পর্যন্ত সড়কে ছিল মানুষের ভিড়। বেশিরভাগ মানুষকে এ পথ দিয়ে এক কিলোমিটার হেঁটে চিড়িয়াখানায় যেতে হয়েছে। তারপর কাউন্টারে ছিল লম্বা সারি। সব পেরিয়ে একজন মানুষকে চিড়িয়াখানায় ঢুকতেই অন্তত এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয়েছে।
চিড়িয়াখানার ভেতরে সুবিশাল জায়গা থাকলেও এদিন ভেতরে স্বাভাবিক হাঁটা-চলা করার জায়গা ছিল না। গরম আর মানুষের ভিড়ে এক অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। যদিও সব কিছু ছাপিয়ে আগত দর্শনার্থীরা ভোগান্তির চেয়ে আনন্দটাই বেশি উপভোগ করেছেন।
সাভার থেকে আসা শাহরিয়ার হোসেন তন্ময় জানান, ঈদ একটা উৎসবের সময়। দেখতে দেখতে ছুটি শেষ হয়ে যাচ্ছে। পরিবারের ইচ্ছে ছিল চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখার। তাই তাদের নিয়ে এখানে এসেছি। চিড়িয়াখানায় ঢুকতে অনেক সময় লেগেছে। অনেক মানুষ চিড়িয়াখানায় এসেছে। চিড়িয়াখানার ভেতরেও খুব ভয়াবহ অবস্থা ছিল। তারপরও যতটুকু সম্ভব তাদের ঘুরিয়ে দেখিয়েছি।
যাত্রাবাড়ী থেকে তিন বন্ধু ও দুই ভাগ্নেকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় আসেন মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, চিড়িয়াখানায় আসতে অনেক বেগ পোহাতে হয়েছে। দীর্ঘ পথ হাঁটতে হয়েছে। কষ্ট হলেও দুই ভাগ্নে খুব খুশি হয়েছে। প্রাণী দেখে ওদের বেশ ভালো লেগেছে। ভেতরে অনেক মানুষ ছিল।
বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, প্রতি বছরই ঈদের দ্বিতীয় দিন জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ব্যাপক সমাগম ঘটে। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। সারা দিন চিড়িয়াখানায় একইভাবে লোকজন এসেছে। সারা দিন ভেতরে মানুষ প্রবেশ করেছে, বের হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে হাঁটার মতো অবস্থা ছিল না। ভেতর-বাহিরে একই অবস্থা ছিল। ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চিড়িয়াখানায় বাঘ, ভালুক, হরিণ, সিংহ, বানর, জলহস্তী, কুমির, সাপ, ইম্পালা, গয়াল, লামা, ময়না, টিয়া, ক্যাঙারু, জিরাফ, জেব্রা, হাতি, ময়ূর, উটপাখি, ইমু, শঙ্খচিল, কুড়াবাজ, তিলাবাজ, গন্ডার, হায়েনাসহ ১৩৬ প্রজাতির ৩ হাজার ৩৪টি প্রাণী ও পাখি রয়েছে।
এসএন