প্রযুক্তি এবং অর্থনীতির লড়াইয়ের দৃশ্য চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে, আর এর মধ্যে কেন্দ্রে রয়েছে টিকটক।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নতুন রাজস্ব নীতির পরিপ্রেক্ষিতে, চীন জানিয়ে দিয়েছে যে, যদি ওই নীতি চীনের উপর কার্যকর হয়, তাহলে টিকটক বিক্রি করার অনুমতি দেওয়া হবে না। এর পরপরই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৭৫ দিনের জন্য টিকটক বিক্রির বাধ্যবাধকতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
গত বছর ১৯ জানুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রশাসন একটি বিল পাস করেছিল, যাতে বলা হয়েছিল, টিকটক বিক্রি করতে হবে। সেদিনই সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তা আইনে পরিণত করেন। তবে, ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউজে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর, ট্রাম্প ৭৫ দিনের জন্য এই মেয়াদ বাড়িয়ে দেন।
মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ৫ এপ্রিল, শনিবার, এবং যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে চীনসহ বিভিন্ন দেশকে নতুন বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে, যা ৫ এপ্রিল থেকেই কার্যকর হয়। ট্রাম্প আগেই জানিয়েছিলেন, ৫ এপ্রিলের মধ্যে টিকটক বিক্রি না হলে মেয়াদ বাড়ানো হবে।
আগের পরিস্থিতি অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২৪ সালের ২৪ এপ্রিল ‘প্রটেকটিং আমেরিকানস ফ্রম ফরেন অ্যাডভারসারি কন্ট্রোলড অ্যাপলিকেশন অ্যাক্ট’ নামক একটি বিলে সই করেন, যার মাধ্যমে টিকটককে বিপদে ফেলানো হয়। ওই আইনে বলা হয়, টিকটকের চীনা মূল কোম্পানি বাইটড্যান্স, টিকটককে আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি না করলে অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হবে।
টিকটক এই আইনের বিরুদ্ধে ৭ মে আদালতে যায়, দাবি করে যে, এটি বাকস্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করছে। তাতে অবশ্য আদালত ৬ ডিসেম্বর ফেডারেল আপিল আদালতে টিকটকের আবেদন খারিজ করে দেয়।
বিশ্বের নানা দেশেও টিকটক নিষিদ্ধ অথবা সীমিত ব্যবহারের মুখোমুখি হচ্ছে। ২০২০ সালে ভারত সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, এবং ইরান, সেনেগাল, নেপাল, আফগানিস্তান ও সোমালিয়াতেও অ্যাপটির ব্যবহার নিষিদ্ধ। যুক্তরাজ্যও ২০২৩ সালের মার্চে সরকারি ডিভাইসে টিকটক নিষিদ্ধ করেছে। এমনকি চীনেও টিকটক নেই, যার ফলে তিনশো কোটিরও বেশি মানুষ বিশ্বের নানা স্থানে টিকটক ব্যবহার করতে পারছে না।
এসএস/এসএন