২০২৪-২৫ সালের বড় বড় ব্লকবাস্টারে মুখ্য চরিত্রে থাকলেও রশ্মিকা মান্দানা এখন সমালোচনার মুখে। তবে এই সমালোচনার কারণ তার অভিনয় নয়, বরং চরিত্রগুলোর একঘেয়েমি ও পুরুষকেন্দ্রিক রূপায়ণ। রাশমিকা যেসব ছবিতে অভিনয় করেছেন, সেখানে তিনি প্রায় সবসময়ই নায়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন, যেন শুধুই তার ভাবমূর্তি বাড়ানোর উপাদান।
যতগুলো সিনেমায় রশ্মিকা অভিনয় করেছেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘এনিমাল’, ‘পুষ্পা ২’, ‘ছাভা’, ও ‘সিকান্দর’। প্রতিটি ছবিতেই তাঁর চরিত্রের কোনো গভীরতা বা নিজস্বতা নেই, বরং তারা শুধুই নায়কের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং তার চরিত্রের বিকাশের জন্য কাজ করে।
‘এনিমাল’ ছবিতে গীতাঞ্জলি চরিত্রটি রানবীর কাপূরের চরিত্রের জন্য ইমোশনাল পিলারের মতো কাজ করেছে, তবে তার চরিত্রে স্বাধীনতা বা নিজস্ব লক্ষ্য দেখা যায়নি। একইভাবে, ‘পুষ্পা ২’ ছবির শ্রীভল্লী চরিত্রটি প্রেমকাহিনির একটি অংশ হলেও, তার নিজের গল্প, লক্ষ্য বা আত্মবিশ্বাস ছিল না। ‘ছাভা’ ছবিতে ইয়েসুবাই চরিত্রটি ছিল মারাঠা রাণী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে, কিন্তু বাস্তবে তা শুধুই সাম্ভাজির স্ত্রীর ছায়া হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। আর ‘সিকান্দর’ ছবিতে সাইশ্রী রাজকোট চরিত্রটি ছিল একটি নির্ভরশীল প্রেমিকা, যেখানে বয়সের ব্যবধান ও চরিত্রের গভীরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রশ্মিকা মান্দানা এখন একজন বড় তারকা, তাই তার চরিত্র বাছাইয়ের বিষয়ে একটি দায়বদ্ধতা রয়েছে। যখন একজন অভিনেতা বড় পর্দায় কাজ করেন, তখন তার চরিত্রের মধ্য দিয়ে আরও গভীরতা এবং নতুনত্ব আশা করা হয়। দর্শক ও সমালোচকরা বলছেন, রাশমিকা বারবার এমন চরিত্রে অভিনয় করছেন যেগুলোর নিজস্বতা নেই, আর এগুলো শুধুই নায়কের পাশের ‘আভা’ বা তার উপস্থিতির জন্য তৈরি।
অন্যদিকে, আলিয়া ভাট, তাপসী পান্নু ও বিদ্যা বালানদের মতো অভিনেত্রীরা এখন নারীকেন্দ্রিক গল্পে কাজ করছেন এবং তাদের চরিত্রে বিশাল গভীরতা রয়েছে। তবে ভারতীয় সিনেমার বড় একটি অংশ এখনও নায়ক নির্ভর। এখানে নায়ক সাধারণত গল্পের কেন্দ্রবিন্দু এবং নায়িকা শুধুমাত্র সহায়ক উপাদান হিসেবে থাকে। কিন্তু রশ্মিকা মান্দানার মতো “ব্যাংকেবল” নারী তারকারা যখন আছেন, তখন তাদের কাছ থেকে আরও ভালো স্ক্রিপ্ট, গভীর চরিত্র এবং শক্তিশালী গল্পের প্রত্যাশা করা হয়।
এখন রশ্মিকা মান্দানার সামনে একটি বড় সুযোগ রয়েছে তার ক্যারিয়ারে নতুন দিগন্ত খোলার। তিনি যে একটি বড় তারকা, তাতে কোনো সন্দেহ নেই, তবে তার চরিত্রগুলোতে যদি আরও স্বাতন্ত্র্য, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং বহুমাত্রিকতা না থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে তাঁর প্রতিভা হয়তো মনে থাকবে না।
এসএম/টিএ