বলিউডের প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিবারে জন্ম, কিংবদন্তি গায়ক মুকেশের নাতি এবং সঙ্গীতশিল্পী নিতিন মুকেশের পুত্র হওয়া সত্ত্বেও, অভিনেতা নীল নিতিন মুকেশ মনে করেন— তারকাসন্তান হওয়া মানেই সফলতার নিশ্চয়তা নয়। বরং এটি তৈরি করে একপ্রকার অতিরিক্ত চাপ, যা প্রতিটি কাজে আরও কঠিন করে তোলে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নীল স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “যদি নেপোটিজমে সত্যিই সুবিধা থাকত, তাহলে আজ আমি অন্য কোথাও থাকতাম।” তিনি মনে করেন, পারিবারিক পরিচিতি হয়তো ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম দরজা খুলে দিতে পারে, কিন্তু সেখানে টিকে থাকার লড়াই সম্পূর্ণ নিজস্ব পরিশ্রম ও প্রতিভার ওপর নির্ভর করে।
একটি সঙ্গীত পরিবারে জন্ম নিয়েও অভিনয়ের প্রতি নিজের ভালোবাসার কথা তুলে ধরেন নীল। জানান, সৃজনশীলতা ও প্যাশনই একজন শিল্পীর প্রকৃত পরিচয় তৈরি করে। অভিনয়কে নিজের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু করে তোলার পেছনে তার আত্মবিশ্বাস ও নিষ্ঠা স্পষ্ট।
তিনি বলেন, “প্রতিটি সিনেমার পরেই পরবর্তী কাজের জন্য সংগ্রাম করতে হয়। আমি কখনও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত মনে করিনি, বরং প্রতিটি দিন যেন নতুন করে নিজেকে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ।”
তারকাসন্তান হওয়ায় সমাজের, মিডিয়ার এবং ইন্ডাস্ট্রির এক ধরনের অদৃশ্য প্রত্যাশা ও তুলনার ভার সবসময় বইতে হয় বলেই মনে করেন তিনি। সেই তুলনায়, যারা কোনও পূর্বপরিচয় ছাড়াই নিজের জায়গা তৈরি করেছেন, তাদের জন্য নীলের রয়েছে অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা। তিনি বিশেষভাবে প্রশংসা করেছেন কার্তিক আরিয়ান, রাজকুমার রাও এবং বিক্রান্ত ম্যাসির মতো অভিনেতাদের, যাঁরা সম্পূর্ণ নিজেদের প্রতিভার জোরে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন।
নতুন ওয়েবসিনেমা ‘হিসাব বরাবর’-এ দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি গল্পে দেখা যাচ্ছে নীলকে। এর আগে ‘নিউ ইয়র্ক’, ‘সাহো’, ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’, ‘গোলমাল এগেইন’-এর মতো নানা ঘরানার ছবিতে নিজের অভিনয় দক্ষতা তুলে ধরেছেন তিনি।
২০ বছরের অভিনয়জীবনে বহু উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পরেও নীল মনে করেন, লড়াই এখনও শেষ হয়নি। তার কথায়, “আজও মনে হয়, প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য এক নতুন যুদ্ধ শুরু হচ্ছে।”
তারকাসন্তানদের ক্ষেত্রেও যে প্রতিভা, পরিশ্রম ও ধৈর্য ছাড়া পথ নেই। এবং সফলতা একমাত্র সেই শিল্পীকেই খুঁজে নেয়, যিনি নিজের ক্ষমতায় এগিয়ে যেতে পারেন। নেপোটিজম হয়তো শুরুটা সহজ করে দেয়, কিন্তু শেষ কথা বলে শুধুই লড়াই।
এসএম/টিএ