বাংলা নাটকের দর্শকদের জন্য এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ আট বছর ধরে ইউটিউবে শীর্ষস্থান ধরে রাখা নাটক ‘বড় ছেলে’ অবশেষে পিছনে ফেলেছে আরেকটি নাটক, ‘শ্বশুরবাড়িতে ঈদ’। জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও মেহজাবীন চৌধুরী অভিনীত ‘বড় ছেলে’ যেখানে ৫ কোটি ৪১ লাখ ভিউ নিয়ে শীর্ষে ছিল, সেখানে নিলয় আলমগীর ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি অভিনীত ‘শ্বশুরবাড়িতে ঈদ’ নাটকটি ৫ কোটি ৪৩ লাখ ভিউ নিয়ে শীর্ষস্থানে পৌঁছেছে।
গত বছর এপ্রিলে প্রচারিত এই নাটকটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে এখন বাংলা নাটকের ইউটিউব ভিউয়ে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। মাত্র এক বছরেই নাটকটি অর্জন করেছে এই বিপুল জনপ্রিয়তা।
খবরটি গত সোমবার রাতেই জেনেছেন হিমি। তিনি মনে করেন, এটা দীর্ঘ পরিশ্রমের ফল। হিমির ভাষ্যে, ‘একটি কাজের পেছনে অনেক কষ্ট থাকে। দর্শক সেটা পছন্দ করলে সার্থক মনে হয়। তবে একটি বিষয় খারাপ লাগছে, সেটা হচ্ছে তুলনা। অনেকেই লিখছেন, নাটকটি দিয়ে এ ওকে হারিয়ে দিল। আমার কাছে তুলনা করাটা ভালো লাগে না। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই শীর্ষ ভিউয়ে ২ নম্বরে ছিলাম, এখন শীর্ষে, এই যা। বাংলা নাটকের শীর্ষ ভিউয়ে রয়েছে এটাই বলা প্রাসঙ্গিক। ১ নম্বরে আছি, এটা বলাটাও আমার পছন্দ নয়। কারণ, অনেক নাটক রয়েছে, যেগুলোর ভিউ এখন কম হলেও দর্শকপ্রিয়। যা-ই হোক, এটা আমাকে ভালো কাজে অনুপ্রেরণা দেবে।’ নাটকটিতে জামাই হয়েছিলেন নিলয় আলমগীর। প্রতিক্রিয়া জানতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
শ্বশুরবাড়িতে ঈদকেন্দ্রিক নানা ঘটনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে ‘শ্বশুরবাড়িতে ঈদ’ নাটকের গল্প। বিয়ের পর দূরে থাকলেও এবার শ্বশুরবাড়িতে ঈদ করতে এসে ভিন্ন এক পরিস্থিতির মুখে পড়ে জামাই। দেখা যায়, শ্বশুর কিপটে। যে ঈদে ফিতরা-জাকাত ইত্যাদি দিতে চায় না। সেগুলো নিয়ে সোচ্চার হয় জামাই। নাটকে বার্তা দেওয়া হলেও সেটা কমেডির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এ জন্যই এটি দর্শক পছন্দ করেছেন বলে জানালেন নাটকের পরিচালক মহিন খান।
মহিন বলেন, ‘নাটকটি প্রচারের পর থেকেই দীর্ঘ সময় ট্রেন্ডিংয়ে ছিল। কিন্তু এটা যে কখনো ভিউর দিক থেকে শীর্ষ বাংলা নাটকের একটা হবে, এটা কল্পনাই করিনি। অল্প সময়ে এত দর্শক নাটকটি দেখায় তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞতা। অন্যদিকে “বড় ছেলে” দীর্ঘ সময় ধরে সবচেয়ে বেশি দেখা বাংলা নাটকের তালিকায় ছিল। এটাও আমার পছন্দের একটি নাটক।’
মিজানুর রহমান আরিয়ান পরিচালিত ‘বড় ছেলে’ নাটকে দেখানো হয়েছে মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় ছেলে রাশেদ ও ধনী পরিবারের মেয়ে রিয়ার প্রেমের গল্প। চরিত্র দুটিতে ছিলেন অপূর্ব ও মেহজাবীন। গল্পে দেখা যায়, রাশেদের বাবা একজন স্কুলশিক্ষক। সে অবসরে যাচ্ছে। তখন পরিবারের হাল ধরে বড় ছেলে। কিন্তু কোনো চাকরিই সে খুঁজে পায় না। অন্যদিকে রিয়াকে পরিবার থেকে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বাস্তবতার কাছে হেরে যায় ভালোবাসা।
ভিউর দিক থেকে তৃতীয় স্থানে আছে জাকারিয়া সৌখিন নির্মিত নাটক ‘ভুলো না আমায়’। মুশফিক আর ফারহান, কেয়া পায়েল অভিনীত এ নাটক এখন পর্যন্ত দেখা হয়েছে ৪ কোটি ৯৮ লাখ বার।
আরএ/টিএ